পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, চার মাসের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের রাতযাপন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আমরা দেখব আপনারা দ্বীপে পর্যটকদের যাতায়াত ও রাত্রীযাপন কতটুকু কমিয়ে আনতে পারেন। যদি দেখি, আমরা যেভাবে চাচ্ছি সেভাবে নিয়ন্ত্রণে এবং শৃঙ্খলায় চলে আসছে তাহলে মার্চের শুরুতে রাত্রীযাপনের বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ শনিবার বেলা ১১টায় কক্সবাজার হিল ডাউন সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের বিরল প্রজাতির জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, কোরালের কারণে সেন্টমার্টিন টিকে আছে এবং পর্যটকদের আকর্ষণের মূল কারণ। এখন এই কোরাল ধ্বংস হয়ে গেলে দ্বীপও থাকবে না, পর্যটকও আসবে না। তাই দ্বীপকে বাঁচাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গেলে দ্বীপের মানুষকে সরিয়ে আনা হবে এই খবর সঠিক নয়। আমরা চিন্তা করছি, কীভাবে দ্বীপের মানুষের জন্য স্থায়ী আয়ের উৎস সৃষ্টি করা যায়।
পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ বর্তমানে মারাত্মক অসুস্থ। এটাকে বাঁচাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে দ্বীপের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেন্টমার্টিন দ্বীপের সচেতন মানুষ, পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, প্রশাসন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) ড. নুরুল কাদির, অতিরিক্ত সচিব মো. মোজাহেদ হোসেন, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহিদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মানুষের অবাধ বিচরণ, মাত্রাতিরিক্ত অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন কারণে দিন দিন পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে চরম অস্তিত্ব সঙ্কটে দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপ রক্ষায় সম্প্রতি সেখানে পর্যটকদের যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ এবং রাতযাপন নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় আন্তঃমন্ত্রণালয়। এ সিদ্ধান্ত আগামী বছরের ১ মার্চ থেকে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। ওই সিদ্ধান্তের পর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ এবং পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ক্ষুব্ধ সেন্টমার্টিনের মানুষ ইতোমধ্যে কয়েক দফায় মানববন্ধনও করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কক্সবাজার আসেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।