মাসুম শাহরিয়ার, ইবি প্রতিনিধি :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগের কারণে কার্যত বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন আন্দোলনের কারনে দুইমাস যাবত বিশ্ববিদ্যালের অ্যাকাডেমি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা রয়েছে সেশনজটের ঝুঁকিতে।
সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার নির্দেশ দেওয়ার পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। কিন্তু ইবিতে এখনও শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
গত ১৭ জুলাই সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। নিয়মানুযায়ী সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। আইন অনুযায়ী উপাচার্য সিন্ডিকেট সভা আহবান করতে পারেন। তাই উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে শুরু হচ্ছে না।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে প্রশাসনিকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর শিক্ষক-কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে আসেন না। নিরাপত্তার কারনে হলগুলোতে প্রভোস্টরাও যাচ্ছে না। এতে ভেঙ্গে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা বলছেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নামে আছে, কিন্তু ভিতরে সব ফাঁকা। দুর্নীতি ও সেশনজটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা নাজুক। সবসময় সরকার সমর্থিত লোকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর ফলে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনেও পরিবর্তন আসে। হঠাৎ প্রশাসনিক পদে বড় পরিবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করে। অ্যাকাডেমি ও প্রশাসনিক কাজে নানান জটিলতার সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, নানা ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় উতপ্ত হলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। করোনা পরবর্তী এক বছর সেশনজটে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও যাবতীয় অ্যাকাডেমি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের গতি নিয়ে আসুক।
এ বিষয়ে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম মুসাদ্দিক বলেন, আমরা চাই দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম সচল হোক। গবেষনা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে সহায়তা করবে এমন শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে চাই।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, কয়েকবার আমরা ডিনদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য অনুরোধ করেছি। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়েছে। আমি চাই সৎ ও যোগ্য শিক্ষককে উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক নিশ্চিত করা হোক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক বলেন, আগামী শনিবার ডিনস কমিটির মিটিং আছে। মিটিংয়ে ক্লাস পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আশা করি ভালো একটা রেজাল্ট আসবে। উপাচার্য হিসাবে এমন একজনকে চাই যিনি একাডেমিশিয়ান ও শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষক। যিনি সবাইকে নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।