নরসিংদীতে স্কুল ছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা: নাটোর থেকে গ্রেপ্তার ৪

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

নরসিংদীতে স্কুল ছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা: নাটোর থেকে গ্রেপ্তার ৪

  • নরসিংদী প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ জুন, ২০১৯

নরসিংদীর হাজিপুরে মাদক ব্যবসায় জড়িত না হওয়ায় দশম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শান্তি বেগম ওরফে ফেন্সী রানী ও তার ছেলে শিপলু মিয়াসহ ৪ জনকে নাটোর থেকে গ্রেপ্তার করেছে  পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে নাটোর জেলার নারায়নপুর পুকুরপাড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে  সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ (বিপিএম)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নিহত জান্নাতির শ্বাশুরী শান্তি বেগম  ওরফে ফেন্সী রানী (৪৫), ছেলে সাব্বির আহামেদ শিপলু ওরফে শিবু (২৩), মেয়ে ফাল্গুনী বেগম(২০) ও শ্বশুর হুমায়ন মিয়া (৫০)। সকলেই নরসিংদী চরহাজিপুরের খাসেরচর গ্রামের বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে  পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ (বিপিএম) বলেন, পারিবারিক মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত না করায় জান্নাতুল ফেরদৌসি ওরফে জান্নাতিকে পুড়িয়ে হত্যা করে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন। এ ঘটনায় গত শনিবার   নিহতের বাবা শরিফুল ইসলাম  বাদি হয়ে সদর মডেল থানায় হত্যা  মামলা দায়ের করেন।  এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই  ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তাদের দেওয়া তথ্য মতে, পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একটি দল নারায়গঞ্জের রুপগঞ্জ, টঙ্গি, চাপাইনবাবগঞ্জ অভিযান পরিচালনা করে। সেখানে না পেয়ে নাটোর জেলায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে মঙ্গলবার রাতে এজাহারভূক্ত চার আসামী মাদক ব্যবসায়ী শ্বাশুরী শান্তি বেগম ওরফে ফেন্সী রানী সহ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার তাদের আদালতে শোপর্দ করে আদালতের অনুমতির প্রেক্ষিতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিউর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামান, ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্বে দেওয়া উপ-পরিদর্শক নাইমুল ইসলাম মোস্তাক প্রমুখ। 

উল্লেখ্য, প্রায় ১ বছর  আগে নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম খানের দশম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতি আক্তার (১৬) সাথে পাশের গ্রামের হুমায়ুন মিয়ার ছেলে শিপলু মিয়ার প্রেম হয়। কিছুদিন পরই পরিবারের অমতে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামীর আসল রূপ বেরিয়ে আসে। স্ত্রী জান্নাতিকে পারিবারিক মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত করতে মাদক ব্যবসায়ী শ্বাশুরী শান্তি বেগম ও স্বামী শিপলু তাকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এতে রাজি হয়নি জান্নাতি। ফলে জান্নাতির উপর নেমে আসে কঠোর নির্যাতন। যৌতুকের টাকা না দেওয়া ও মাদক ব্যবসায় জড়িত না হওয়া  চলতি বছরের ২১ শে এপ্রিল রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ও শ্বাশুরী শান্তি বেগম ও তার মেয়ে ফাল্গুনী বেগম ও স্বামী শিপলু  জান্নাতির শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।  দগ্ধ হয়ে ছটফট করলেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। পরে এলাকাবাসীর চাপে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি হলে তাকে  ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। দীর্ঘ ৪০দিন মৃত্যু যন্ত্রনার পর  গত ৩০ মে  ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads