ভারতের উড়িষ্যার উপকূলবর্তী এলাকায় আঘাত হানার পর এখন খুলনা ও এর আশপাশের এলাকায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা অঞ্চল এবং এদের পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি। ফণীর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ফণী বাংলাদেশের উপর দিয়ে আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটি বাংলাদেশে ৬ ঘণ্টা অবস্থান করতে পারে। এর পর এটি আবারও ভারতে প্রবেশ করবে। বাংলাদেশে অবস্থানের সময় এটির গতিবেগ থাকবে ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪২ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতের ওড়িশা উপকূল ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড়টি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও কিছুটা দুর্বল হয়ে শনিবার ভোর ৩টায় ভারতের গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সকালের মধ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চল (সাতক্ষীরা–যশোর–খুলনা) এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
বাংলাদেশ এবং এর উপকূলীয় এলাকায় শুক্রবার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর উত্তল রয়েছে।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ছয় নম্বর বিপদসংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর কবল থেকে নিরাপত্তার লক্ষ্যে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় জেলাগুলোর ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।