আপডেট : ১৬ February ২০২২
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে নিজের পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান। তবে তার লাইভের শুরুতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারেনি তিনি আত্মহত্যা করবেন। তাই যথাসময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেনি তারা। বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ কার্যালয়ে আত্মহত্যা বিষয়ে আয়োজিত সেমিনারে এ কথা জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান। সিআইডি প্রধান বলেন, মহসিন খান ফেসবুক লাইভে ছিলেন সাড়ে ১৬ মিনিটের বেশি। পরে মনে হলো কেন এ বিষয়টি আমরা টের পেলাম না? এ বিষয়ে কেউ আমাকে দোষারোপ করেনি। আমি নিজেই নিজেকে দোষারোপ করেছি। এরপর বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকের সিঙ্গাপুর অফিসের কাছে জানতে চাই। ফেসবুক আমাদের জানালো, লাইভের প্রথমে মহসিন খানের কথা স্বাভাবিক ছিল। তিনি আত্মহত্যা করবে এমনটা তাদের মনে হয়নি। মাহবুবুর রহমান বলেন, ফেসবুক জানিয়েছে লাইভে প্রথমে পারিবারিক জীবন, ব্যক্তিগত জীবন, ব্যবসায়িক জীবন নিয়ে কথা বলছিলেন মহসিন খান। এর ফলে আত্মহত্যার বিষয়টি সংস্থাটি বুঝতে পারেনি। তবে লাইভের শেষ হওয়ার আড়াই মিনিট আগে ফেসবুক বুঝতে পারে তিনি আত্মহত্যা করবেন। এ বিষয়ে ফেসবুককে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যাতে আত্মহত্যা রোধে আমাদের সঙ্গে কাজ করে। সিআইডি প্রধান বলেন, মহসিন খান যখন লাইভ শুরু করেন, তখন যারা লাইভ দেখছিলেন আমরা তাদের ট্র্যাক করার চেষ্টা করেছি। এটার উদ্দেশ্য কাউকে দোষারোপ করা নয়, তাদের সচেতনতা করা। যাতে করে ভবিষ্যতে তারা সচেতন হয়ে আমাদের জানাতে পারে। সিআইডি আত্মহত্যা রোধে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করবে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ চালুর পর থেকে গত প্রায় চার বছরে ফোনে সাড়া দিয়ে এক হাজার ৪৯২টি আত্মহত্যার ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। তবে ফোনকলে সাড়া দিয়ে এক হাজার ১৩৫টি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ, যারা আত্মহত্যা করেছেন। সেমিনারে এই তথ্য জানান ৯৯৯-এর অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) তবারক উল্লাহ। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ২০১৭ সালে চালু হওয়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ বর্তমানে ৫০০ জনবল নিয়ে কাজ করছে। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯৯৯-এ প্রায় সাড়ে তিন কোটি কল এসেছে। এর মধ্যে এক কোটি ১৫ লাখ ফোন কলের সেবা দেওয়া হয়েছে, যা মোট কলের ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে ৭৮ ভাগ পুলিশি সেবা, নয় ভাগ ফায়ার সার্ভিস এবং ১১ ভাগ অ্যাম্বুলেন্স সংক্রান্ত সেবা। তবারক উল্লাহ বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ চালুর পর থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারির পর্যন্ত এক হাজার ৪৯২টি আত্মহত্যা নিয়ে ফোন কল এসেছে, যা আমরা প্রতিরোধ করতে পেরেছি। তবে কয়েকজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এর বাইরে আত্মহত্যার ফোন পেয়ে এক হাজার ১৩৫টি আত্মহত্যাজনিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৯৯৯ এর এই কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ অটো কলার লোকেশন না থাকায় অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। কলারের লোকেশন আমরা যত তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবো তত তাড়াতাড়ি যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সহজ হবে। ৯৯৯-এ অটো কলার লোকেশন যুক্ত করতে কাজ চলছে। সেমিনারে আরো অংশগ্রহণ করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়েটিভ কেয়ার বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নেজাম উদ্দিন আহমেদ, ফিজিশিয়ান, কাউন্সিলর এবং সাইকোথেরাপি প্রাকটিশনার ফোনিক্স ওয়েলনেস সেন্টারের প্রফেসর ড. সানজিদা শাহরিয়া, ড. আহসান উদ্দীন আহমদ, ইশরাত জাহা, বিথী, অরুপ দাস ও তারেক মিয়াজি।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১