বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৪ October ২০২১

খানাখন্দে সড়কে চরম জনদুর্ভোগ


বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নিলখোলা সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় থেকে সাদ্দাম বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটর সড়কটি দীর্ঘ ১০ বছরে সংস্কার না হওয়ায় কার্পেটিং উঠে খানাখন্দের পরিণত হয়েছে। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক ভেঙ্গে খালে চলে গেছে এবং অনেকাংশে মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। গত ১০ বছর ধরে সড়কটিতে যানবাহন চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ৬ গ্রামের ৩৫ হাজার এবং আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ২ গ্রামের মানুষকে। জরুরী ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজন, ভূক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১০-২০০১১ অর্থ বছরে গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের নিলখোলা সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় থেকে সাদ্দাম বাজারের পর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটর পর্যন্ত কার্পেটিং করা হয়। গত ১০ বছরে সড়কটিতে কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দ পরিণত হয়ে সড়কটিতে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। কোথায়ও কোথায়ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে ফলে জনদূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বার্থী ইউনিয়নের উত্তর ধুরিয়াইল, ধানডোবা রাজাপুর, সোমদ্দার পার, কান্দির পাড়, নন্দন পাট্রি,উত্তর সাজুরিয়া, সুন্দরদী গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার এবং আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ২ গ্রামের বাসাইল ও চেঙ্গুটিয়া গ্রামের সাধারন মানুষকে।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটির নিলখোলা সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় থেকে সাদ্দাম বাজারের পর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার পুরাটাই থানাখন্দে ভরপুর। সড়কটির পিচ পাথর উঠে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নিলখোলা সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় থেকে রাজাপুর বাজার পর্যন্ত কার্পেটিং উঠে গিয়ে বিশাল বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। রাজাপুর বাজারের পরে পশ্চিম দিকে সাদ্দাম বাজারের পর পর্যন্ত অনেক জায়গায় সড়ক ভেঙ্গে খালে চলে গেছে। রাস্তার অনেক অংশ দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কার্পেটিং সড়ক ছিল। বলতে গেলে পুরে সড়কটিতে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এক সময় সড়কটিতে ছোট মাঝারি অনেক যানবাহন চলাচল করলেও বর্তমানে সড়ক খারাপ হবার কারনে সকল যানবাহন চলাচল অনেক অংশে কমে গেছে। রিকসা, ভ্যান, অটো, মাহেন্দ্র,মাজারী ট্রাক,পিকাফ চলাচল করলেও তাদের নানান দূর্ভোগ পোহাতে হয়। সড়কটি খানাখন্দ পরিনত হওয়ার কারনে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সড়কটি খারাপ থাকার কারনে ছাত্র-ছাত্রিদের অত্যাধিক ঝুকি নিয়ে স্কুল কলেজে যাতায়াত করতে হয।

এ সময় স্থানীয়রা জানান, নিলখোলা সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় ভায়া সাদ্দাম বাজারের সড়কটি দিয়ে গৌরনদীর উত্তর ধুরিয়াইল, ধানডোবা রাজাপুর,সোমদ্দার পাড়,কান্দির পাড়, নন্দন পাট্রি,উত্তর সাজুরিয়া,সুন্দরদী গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে। এ ছাড়াও এবং আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বাসাইল ও চেঙ্গুটিয়া ও রাজাপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল পরিবহন করে। সড়কটি ব্যবহার করে ধানডোবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ধানডোবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলীয়া মাদ্রাসা,কওমী মাদ্রাসার, নুরানী মাদ্রসায় শত শত শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। সাদ্দাম বাজারের ব্যবসায়ী শামীম হাওলাদার (২৮) বলেন, সড়কটি নির্মানের পর ১০ বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত কোন সংস্কার কাজ করা হয়নি। ফলে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পিচ-পাথর উঠে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। সংস্কারে অভাবে সড়কের রাস্তা ভেঙ্গে খালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কোটি টাকা ব্যায়ে সড়কটি নির্মান করার পরে ১০ বছরে সংস্কারের অভাবে জনগুরুত্বপূর্ন সড়কটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে অথচ দেখার কেউ নেই।

তিনি আরো বলেন,আমার দোকানের সামনে সড়কে গর্ত হবার কারনে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটতো তাই আমার ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে সড়ক মেরামত করায় কিছুটা হলেও দুর্ঘটনা কমেছে। ধানডোবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফয়সাল হাওলাদার (৩২) বলেন, সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ায় অনেক সমস্যা পোহাতে হয়। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার মানুষ দৈনন্দিন কাজকর্ম, ব্যবসায়ীক কাজ ও প্রশাসনিক কাজে জেলা উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। গত ১০ বছর ধরে সড়কে খানাখন্দ পরিনত হওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সড়টি খারাপ হবার কারনে অনেক মূমূর্ষ রোগী নিয়ে হাসপাতালে পৈাছাতে দেরি হয়ে যায় ফলে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি পোহাতে হয়।

মোক্তার ফুড প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরির মালিক মোক্তার হোসেন (৪৫) জানান, সড়ক ভাঙ্গা চুড়ার কারনে মালামাল পরিবহন করতে খরচ বেশী পড়ে যাওয়ায় আমার আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি। অনেক সময় অনেক পরিবহন ফ্যাক্টরিতে আসতে চায় না ভাড়া বারতি দিয়ে আনতে হয়। বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ শিমুল সরদার বলেন, সড়ক নষ্ট হওয়া শুরু হলে আমরা গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অবহিত করে সংস্কারে জন্য অনুরোধ করেছি কিন্তু তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। এলজিইডি কর্মকর্তাদের গাফলতি ও অবহেলার কারনে কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সড়কটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখনো উদ্যোগ নিয়ে সড়কটি সংস্কার করা হলে সাধারন মানুষের দূর্ভোগ লাঘব করা সম্ভব।

বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের ৭.৮.৯ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য মিনু বেগম (৪০) বলেন, সড়কটির দুরাবস্থার কথা জানিয়ে সড়কটি সংস্কারে জন্য অসংখ্যবার উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করা হলেও তারা কোন ভ্রুক্ষেপ বা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাদের গাফলতি ও অবহেলায় একটি সড়ক বিলীন হয়ে হতে বসেছে। দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।

এ প্রসঙ্গে গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ অহিদুজ্জামান বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সড়ক সংস্কারে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১