বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২১ July ২০২১

১০ মিনিটে মহাকাশ ভ্রমণ করে এলেন জেফ বোজেস


নিজের রকেট জাহাজ নিউ শেপার্ডে করে মহাকাশে ছোট-খাট ভ্রমণ করে ফিরেছেন বিলিয়নিয়ার জেফ বেজোস। তার এই রকেট জাহাজটিতে এবারই প্রথম কোন ক্রু ফ্লাইট পরিচালনা করা হলো।

এ যাত্রায় তার সাথে ছিলেন তার ভাই মার্ক বেজোস, মহাকাশে পাড়ি দেয়ার দৌড়ের একজন পথপ্রদর্শক হিসেবে পরিচিত ৮২ বছর বয়সী ওয়ালি ফাঙ্ক এবং ১৮ বছর বয়সী একজন শিক্ষার্থী।

তারা এমন একটি ক্যাপসুলে করে এই ভ্রমণ করেছেন যার জানালাগুলো বড় থাকায় পৃথিবীর চমকপ্রদ দৃশ্য উপভোগের সুযোগ পেয়েছেন।

পরিভ্রমণ শেষে মাত্র ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ডের মাথায় ক্যাপসুলটি পৃথিবীতে ফিরে আসে। নিজের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে জেফ বেজোস আনন্দে চিৎকার করে বলেন: "সেরা দিন!"

বেজোসের সংস্থা ব্লু অরিজিন এই নিউ শেপার্ড নামে রকেটটি তৈরি করেছে। এটি মহাকাশ পর্যটনের জন্য ক্রমবর্ধমান বাজারের চাহিদা পূরণের জন্যই নকশা করা হয়েছে।

অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা বেজোস এবং তার "বিলিয়নিয়ার স্পেস রেস"-এর অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা অবশ্য এর জন্য কিছুটা সমালোচনার মুখেও পড়েছেন। অনেকে এটাকে কিছু অতি-ধনীদের আনন্দ ভ্রমণ হিসেবে দেখছেন।

সমালোচকরা বলছেন, এই অর্থ কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি বা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যয় করা যেতে পারে।

তবে বেজোস জোর দিয়ে বলেছেন যে তার একটি পরিবেশগত পরিকল্পনাও রয়েছে।

বেজোস-এর চিন্তা-ভাবনা কী?

আমেরিকান টেলিভিশন চ্যানেল এমএসএনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সমস্ত ভারী শিল্প, দূষণ ছড়ায় এমন শিল্পগুলোকে মহাকাশে স্থানান্তরিত করা উচিত।

''পৃথিবীকে অন্য গ্রহগুলোর মধ্যে সুন্দর রত্নের মতো করে গড়ে তোলা উচিত,'' তিনি বলেন।

"এটি অর্জনে দশকের পর দশক সময় লাগবে, তবে তা শুরু করতে হবে এবং বড় কিছুর শুরু ছোট ছোট পদক্ষেপেই হয়।

''এই উপকক্ষপথে পরিভ্রমণ আমাদের সেই সুযোগটিই করে দিচ্ছে, আমাদের বার বার অনুশীলন করার সুযোগ দিচ্ছে," বেজোস বলেন।

এই ফ্লাইটে মহাকাশে যাওয়া সবচেয়ে বেশি বয়স্ক ব্যক্তি ছিলেন মিস ফাঙ্ক এবং মহাকাশে যাওয়া সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তিও ছিলেন যার নাম অলিভার ডিমেন।

টেক্সাসের ভ্যান হর্নের কাছে একটি ব্যক্তিগত উৎক্ষেপণ সাইট থেকে মহাকাশযানটি ব্রিটিশ সামার টাইম ১৪:১২ তে উড্ডয়ন করে।

নভোচারীদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

উড্ডয়নের দু'মিনিট পরে ক্যাপসুলটি তার রকেট থেকে আলাদা হয়ে কার্মান লাইনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে- এটি স্থান মহাকাশের সীমানা হিসেবে স্বীকৃত এবং এটি পৃথিবী থেকে ১০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত।

সদ্য মহাকাশে যাওয়া নভোচারীরা আনন্দে চিৎকার করে উঠেন "ওয়াও!"

ফ্লাইটের পরে ব্রিফিংয়ে চার মিনিটের ওজনহীনতার সময় ক্যাপসুলে থাকা আরোহীরা ডিগবাজি খাচ্ছেন, উল্টে পড়ে যাচ্ছেন- এমন একটি ভিডিও দেখানো হয়।সেখান থেকে পৃথিবীর অত্যাশ্চর্য দৃশ্যগুলিও দেখা যাচ্ছিল।

জেফ বেজোস বলেছিলেন যে মাইক্রোগ্রাভিটির সংবেদন দেখে তিনি অবাক হয়েছিলেন: "খুবই স্বাভাবিক অনুভব করছিলাম," তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন।

মিস ফাঙ্ক বলেন: "এটি দুর্দান্ত ছিল, আমি এটি পছন্দ করেছি, আবার যাওয়ার জন্য তর সইছে না আমার।"

অন্যান্য নভোচারী কারা?

মিস ফাঙ্ক ১৯৬০-এর দশকে 'মার্কারি ১৩' নামে একটি নারী দলের সদস্য ছিলেন।

এই দলটি পুরুষ নভোচারীদের মতোই সব ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছেন তবে তাদের কখনো মার্কিন জাতীয় মহাকাশ কর্মসূচীর আওতায় মহাকাশে পাঠানো হয়নি।

বেজোস সোমবার সিবিএস নিউজকে বলেছেন: "ওয়ালি আমাদের সবাইকে পেছনে ফেলতে পারেন।

''মার্কারি থার্টিনে থাকার সময় তিনি সব পুরুষদের চেয়েও সেরা ছিলেন এবং আমি হলফ করে বলতে পারে যে, এখনো তিনি তেমনটাই রয়েছেন।"

বেজোসের ভাই ৫৩ বছর বয়সী মার্ক নিউইয়র্ক ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা রবিন হুডের একজন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। অলিভার ডিমেন একজন ডাচ কোষাধ্যক্ষের ছেলে। তার মূলত দ্বিতীয় ফ্লাইটে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে একজন বেনামী বিজয়ীকে বেজোসের সাথে ভ্রমণ থেকে রুখতে তাকে এই ফ্লাইটেই পরিবর্তন করে নিয়ে আসা হয়।

ক্যাপসুলটি পশ্চিম টেক্সাসের মরুতে অবতরণের আগে প্রায় সর্বোচ্চ ১০৭ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছেছিল।

নামার পথে জেফ বেজোস মিশন নিয়ন্ত্রণকে বলেছিলেন: "এখানে ক্রুরা সবাই খুব খুশী।"

মার্ক বেজোস বিমানের ইতিহাসের আইকনিক কিছু বিষয় ফ্লাইটে নিয়ে গিয়েছিলেন।

এগুলোর মধ্যে রয়েছে রাইট ব্রাদার্সের প্রথম বিমানে একটি ক্যানভাসের টুকরা, ১৭৮৩ সালে প্রথম উষ্ণ বায়ু বেলুন বিমান চালনা করা গাড়ি থেকে তৈরি একটি মেডেলিয়ান এবং পাইলট আমেলিয়া ইয়ারহার্টের ব্যবহৃত এক জোড়া গগল বা চশমা।

জেফ বেজোস সম্প্রতি ব্লু অরিজিন সহ তাঁর অন্যান্য উদ্যোগগুলিতে মনোনিবেশ করার জন্য তার প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী হিসাবে পদত্যাগ করেছেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১