বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৪ June ২০২১

খাদ্য নিরাপত্তা এবং নিরাপদ খাদ্য


নুর মোহাম্মদ ভূঁইয়া সুমন

খাদ্য সংকট বর্তমান বিশ্বের একটি অন্যতম প্রধান সংকট। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট কিছু দেশে গৃহযুদ্ধ এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার জন্ম দেবে। অন্যদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্বব্যাপী এক নীরব সুনামি চলছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাই একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

‘খাদ্য নিরাপত্তা’ ধারণাটি বর্তমান বিশ্বের একটি বহুল আলোচিত বিষয়। এখানে খাদ্য নিরাপত্তা বলতে মূলত সবার জন্য খাদ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তাকেই বোঝায়। অর্থাৎ যখন বিশ্বে খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুদ থাকবে এবং চাওয়ামাত্র খাদ্য পাওয়া যাবে—এমন অবস্থাকেই বোঝাবে খাদ্য নিরাপত্তা। খাদ্য নিরাপত্তা ধারণাটি আসলে একটি ত্রিমাত্রিক ধারণা। এই তিনটি মাত্রা হলো—খাদ্যের প্রাপ্যতা, খাদ্যের ক্রয়যোগ্যতা এবং খাদ্যের ব্যবহার। খাদ্যের প্রাপ্যতার ব্যাপারটি অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন, দেশজ খাদ্যশস্যের উৎপাদন, মৎস্য সম্পদের উৎপাদন, প্রাণিজ খাদ্যের উৎপাদন, খাদ্য আমদানি ও খাদ্য মজুত ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। খাদ্যের ক্রয়যোগ্যতা  নির্ভর করে অবস্থানগত অর্থনৈতিক ও সামাজিক সহজ লভ্যতার ওপর। আর খাদ্য ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে দেহের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি জোগান দেওয়া খাদ্য নিরাপত্তার  অন্যতম প্রধান শর্ত।

দৈনন্দিন মানুষ যে খাদ্য গ্রহণ করে তা অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ হতে হবে। অর্থাৎ খাদ্য ভোগের সঙ্গে নিরাপদ খাদ্যের ধারণাটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। নিরাপদ খাদ্য এমন একটি বৈজ্ঞানিক ধারণা যা দ্বারা খাদ্যের রক্ষণাবেক্ষণ, খাদ্য তৈরি ও খাদ্য মজুত করাকে বোঝায়। এর বাস্তবায়নই মানুষকে খাদ্যর কারণে অসুস্থতা থেকে রক্ষা করে। যেসব খাদ্য স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন, যা গ্রহণে মানুষের দেহ ও মনের বিকাশ ঘটে এবং যা শরীরের ওপর কোনো কুপ্রভাব ফেলে  না বরং মানুষকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম থাকতে সাহায্য করে, তাকেই বলা যায় নিরাপদ খাদ্য।

কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে  অনিরাপদ বা ভেজাল খাদ্য এক বিপজ্জনক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। শিশু খাদ্য থেকে শুরু করে ফলমূল, শাক-সবজি, মাছ-মাংস, দুধ, মিষ্টি, প্যাকেটজাত খাদ্যসহ প্রায় সব ধরনের খাবারেই বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এ দেশের খাদ্যে বহুল ব্যবহূত রাসায়নিক দ্রব্যগুলো হলো—ফরমালিন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ইথোফেন, কাপড়ের রং, ইউরিয়া, কপার সালফেট, ডিডিটি হাইড্রোজ ইত্যাদি। ভেজাল এসব খাদ্য গ্রহণ করে মানুষ প্রতিনিয়ত দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এক কথায় মানুষ আজ এক চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই এ অবস্থার অবসান ঘটাতে নিরাপদ খাদ্য পরিবেশ গড়ে তালো একান্ত প্রয়াজেন, যা আজ শুধু প্রয়োজন নয় বরং অপরিহার্য। সুতরাং এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য সরকার, বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সচেতনতা একান্ত জরুরি। একই সঙ্গে সামাজিক সচেনতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১