বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৫ June ২০২১

তিন লাখ টাকায় দুই বোনকে ভারতে বিক্রি!


আবদুল মান্নান পল্টন, ময়মনসিংহ

জেলার গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুরের দুই তরুণীকে তিন লাখ টাকায় ভারতে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাচার হওয়া দুই তরুণী হলো— উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র আজিজুল ইসলামের মেয়ে কুলছুমা আক্তার (২২) ও সুমাইয়া আক্তার (১৮)।

জানা গেছে, দুই বছর আগে শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় রিদিশা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের একটি বিস্কুট কোম্পানিতে চাকরি নেয় ওই দুই বোন। জৈনা বাজার এলাকায় বাবুল মার্কেটের পেছনে হাবিবুল্লাহর বাড়িতে রুম ভাড়া নিয়ে তারা বসবাস করতো। তখন নারী পাচারকারী দলের সদস্য সুজন (৪৫) ও ইউসুফ (২২) এই দুই বোনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। সুজন নিজেকে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার এবং ইউসুফ নিজেকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার লোক হিসেবে পরিচয় দেয়। তারা জৈনা বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে। এক সময় কুলছুমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ইউসুফ। এরপর তারা বিয়ে করে। বিয়ের দুই মাস পর সুজন ও ইউসুফ ভালো চাকরির মাধ্যমে মাসে ৪০/৫০ হাজার টাকা আয়ের লোভ দেখিয়ে চোরাপথে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্ত দিয়ে ভারতে নিয়ে যায় দুই বোনকে। এরপর এই দুই বোনকে তিন লাখ টাকায় ভারতের রানাঘাট এলাকায় নিয়ে নারী ব্যবসায়ী বাবলু/রাহুলের কাছে বিক্রি করে দেয়। সেখানে দুই বোনকে আলাদা আলাদা রেখে পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এলাকার বিভিন্ন বাসায় ও হোটেলে রেখে দেহব্যবসা করানো হতো। তাদের কথা না শুনলেই দেওয়া হতো ইলেকট্রিক শক। কঠোর নজরদারিতে ওদের রাখা হতো। পশ্চিমবঙ্গে করোনার প্রার্দুভাবে ১৬ মে থেকে লকডাউন শুরু হলে তাদের ওপর নারী পাচারকারীদের নজরদারি শিথিল হয়। এই সুযোগে দুই বোন নারী পাচারকারীদের নরক থেকে পালিয়ে আসে। গত ১৭ মে সুমাইয়া হাওড়া স্টেশন এলাকায় পুলিশের হাতে আটক হয়। পুলিশ তাকে কলকাতার শিয়ালদহ এলাকায় ভারত সরকার পরিচালিত সেফ হোম পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের হাতে ন্যস্ত করে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর রায় ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, সুমাইয়া এখন এখানে ভালো আছেন। বিষয়টি বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে গত ২১ মে ভারতের বোঝাপড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তার হয় কুলছুমা। বিএসএফ তাকে ভারতীয় পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

এদিকে গত তিন মাস ধরে দুই তরুণী সন্তান নিখোঁজ হওয়ার পর তাদের মা-বাবা পাগলপ্রায়। বাবা আজিজুল ইসলাম জানান, মাঝে মধ্যেই ভারতীয় নাম্বার থেকে আমাদের কাছে কল করতো ওই দলের লোকজন। দুই লাখ টাকা দাবি করতো আমাদের কাছে, তাহলে মেয়েদের আবার দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিবে। আর হুমকি দিত বাংলাদেশের কাউকে এ কথা জানালে দুই বোনকে খুন করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিবে। অপহূত দুই বোনের মা-বাবা গফরগাঁও প্রেস ক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে ঘটনাটি জানায়। সাংবাদিকদের পরামর্শে তারা গত ২৮ মে লিখিত অভিযোগ করতে শ্রীপুর থানায় যায়। গত ছয়দিনেও শ্রীপুর থানা পুলিশ এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা মামলা নেয়নি। এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি খন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, এ বিষয়টি আমাদের জানা নেই।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১