বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ৩০ May ২০২১

ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ফসল নষ্ট


জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের ১৯টি ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন পাঁচশতাধিক কৃষক। ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় আম, ধান, লিচুসহ ৩০০ একর জমির ফসল পুড়ে গেছে। পচে যাচ্ছে ঐ এলাকার বাগানের গাছের আম। ভুক্তভোগী এলাকার তিনশতাধিক কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও। কিন্তু ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় আম ও ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, তা মানতে নারাজ ভাটা মালিকরা।

কৃষকরা জানান, চলতি মাসের ১৩ ও ১৫ তারিখ ভোরে হামিদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পলাশবাড়ী ও বাঁশপুকুর মৌজার এআরবি ব্রিক্স, একে ব্রিক্স, সোহাগী ব্রিক্স, অর্ণব ব্রিক্স, একতা ব্রিক্স, ও জহুরা ব্রিক্স ছয়টি ইটভাটার নিষাক্ত ধোঁয়া ছেড়ে দেয়। এতে দুই মৌজার ২০০ একর ধান ও ১০০ একর জমির ৫০টি আম বাগান, বাঁশ বাগান, লিচু বাগান, কলা, নারিকেল, পেয়ারা, জলপাইসহ প্রায় ৩০ প্রকার ফসলের মাঠ নষ্ট হয়ে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পার্বতীপুর উপজেলার ৯ নং হামিদপুর একটি ইউনিয়নেই রয়েছে ১৯টি ইটভাটা। এর বেশির ভাগ ইটভাটাই অবৈধ। দক্ষিণ পলাশবাড়ী ও বাঁশপুকুর মৌজার ছয়টি ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসের ফলে ওই এলাকার ধানের গাছ পুড়ে গেছে এবং বাড়ির চারপাশের আম-কাঁঠাল ও অন্যান্য গাছের পাতা কুঁকড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া ফলগুলো ঝরে পড়ছে। ৫০টি আমবাগানের আমের নিচের অংশ পচে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। বাগানের আমগুলো বর্তমানে বিক্রির অনুপযোগী। ওই এলাকার বিষাক্ত গ্যাসের ধোঁয়ায় পুড়ে যাওয়া ফসল ঘরে তোলার মতো অবস্থায় নেই কোনো কৃষকের।

কাশেম আলী, রিয়াজুল মন্ডল, শাহনাজ বেগমসহ শতাধিক কৃষক জানান, পুরাতন পদ্ধতির (ফিস) ভাটা ব্যাবহার করছে ভাটা মালিকরা। এ ভাটার গ্যাস দিয়ে আমাদের আমের বাগানের আম, ধানসহ ৩০ প্রকার ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তারা বলেন, ভাটার মালিকরা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। আমরা এর প্রতিকার চাই।

এ বিষয়ে হামিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদিকুল ইসলাম বলেন, ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসের ফলে এই এলাকার কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে। তারা আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের ইটভাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেছি। আমাদের এই এলাকার অনেক কৃষকই বর্গাচাষি। তারা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে। এখন তাদের বেঁচে থাকার উপায় পর্যন্ত নেই।

এ ব্যাপারে একে ব্রিক্সের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার ইটভাটা এখনো চালু আছে। আগামী আরো এক মাস চলবে। ইটভাটা থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের গ্যাস ছাড়া হয়নি। অথচ এলাকার লোকজন আমাকে দোষ দিচ্ছে।

পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাশিদ কায়সার রিয়াদ বলেন, হামিদপুর ইউনিয়নের ছয়টি ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসের ফলে বহু কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। তিনশতাধিক কৃষকের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি আমি পেয়েছি। অভিযুক্ত ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১