আপডেট : ৩০ May ২০২১
আগামী দুই দিন দেশের উত্তরাঞ্চল ও কাছাকাছি ভারতীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। এই সময়ে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, যমুনেশ্বরী ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে পারে। একইসঙ্গে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে তিস্তা নদীর পানি। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। সর্বশেষ অন্য খবরে বাংলাদেশের খবর-র লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে তিস্তা চরের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। এরইমধ্যে নদীর পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা চরের কয়েকশত একর জমির পাট, বাদাম, মরিচ, তিল, ধান বীজতলা ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ও ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও কাছকাছি ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। এই সময়ে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, যমুনেশ্বরী ও ব্রহ্মপুত্রের পানি সময়বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং তিস্তা নদীর পানির সমতল ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে, অপরদিকে যমুনা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উভয় নদ-নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি সমতল বাড়ছে। অপরদিকে পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে জানিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, এটা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, যমুনেশ্বরী নদীর পানি বাড়ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই, বন্যার শঙ্কা : গতকাল বিকেল ৩টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এমন প্রেক্ষিতে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ৯টা থেকে থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার (৫২.৪৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর বিকেল ৩টার তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার (৫২.৫০ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুদিন ধরে উজানের পানি ও ভারি বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সানিয়াজান, সিঙ্গীমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এদিকে, পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধা সিন্দুর্না, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এতে কৃষকের পাট, কুমড়া, মরিচ, বাদাম, তিল, ধান বিজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তিস্তা চরের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, নদীতে পানিতে ধানের বীজতলা তলিয়ে গিয়ে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বর্ষা মৌসুমে ধান রোপণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। তিস্তার ব্যারাজ এলাকার জেলে আকবার আলী বলেন, ‘গত দুদিন থেকে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে আমার নদীতে মাছ ধরতে পারছি না। আর জালেও মাছও উঠছে না।’ হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না গ্রামের মফিজার রহমান বলেন, ‘হঠাৎ করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আতঙ্কে আছি। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে চর এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে প্রচুর ভাঙনেরও শঙ্কা রয়েছে।’ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘উজানের পানি ও বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার বিকেল থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।’
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১