বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৫ April ২০২১

বেনাপোলে কোটি টাকার পণ্য চুরি


বেনাপোল স্থলবন্দরের বিভিন্ন শেড থেকে কোটি টাকার পণ্য চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন তরফদারের নেতৃত্বে বন্দরে পণ্য চুরির শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অভিযোগ করে কোনো সমাধান পায়নি বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো। বিশেষ করে কাস্টমসের নিলাম করা পণ্য চুরি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। ফলে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

জানা গেছে, বন্দরের ১নং শেড থেকে ১১০২ টন উন্নত মানের শার্টিং ও প্যান্টিং চুরি করা হয়েছে। যার আমদানিকারক এইচবি ইন্টারন্যাশনাল। মিথ্যা ঘোষণায় আমদানির অভিযোগে পণ্যটি জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। পরে তা নিলামে বিক্রি করা হয় ৬১ লাখ টাকায়। নিলামকারী বেনাপোলের নোভা এন্টারপ্রাইজ পণ্য ডেলিভারি নিতে গিয়ে ১১০২ কেজি চুরি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। তাৎক্ষণিক বন্দরের উপপরিচালক মামুন তরফদারকে জানালে তিনি নিলামক্রেতা মোহাম্মদ আলী খানকে হুমকি দিয়ে বন্দর থেকে বের করে দেন। অন্যদিকে খুলনার আমদানিকারক সান ওয়ার্ল্ড ট্রেড ভারতে থেকে ১৯ লাখ ৯১ হাজার ৩২০ কেজি ব্রোকেন স্টোন আমদানি করে, যা বন্দরের টিটিআইতে সংরক্ষণ করা হয়। পণ্য চালানটি কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনারের নেতৃত্ব ইনভেন্ট্রি করে ১৭ লাখ ৯১ হাজার ৩২০ কেজি কম পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বন্দর কর্তৃপক্ষকে পত্র প্রদান করে।

নিলামকারী বেনাপোলের নোভা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ আলী খান বলেন, বন্দরের উপপরিচালক মামুন তরফদারের নেতৃত্বে বন্দরে একটি শক্তিশালী চোর সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তিন গত দুই বছর বেনাপোলে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বড় ধরনের পণ্য চুরির ঘটনা ঘটছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।

বন্দরের প্রতিটি শেডে ট্যান্ডেল নামে বহিরাগত একজন করে চোর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা সরাসরি রাজস্ব ফাঁকি ও শেড থেকে মালামাল চুরির সঙ্গে জড়িত, এমন অভিযোগ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো। বন্দরে মোট ৪২টি শেড রয়েছে, যার প্রতিটি শেডে বহিরাগত ট্যান্ডেল চোর কর্মরত আছে বর্তমানে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, বন্দর থেকে পণ্য চুরি হচ্ছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। চুরি যাওয়া মালামালের ক্ষতিপূরণ দেন না বন্দর কর্তৃপক্ষ। তা ছাড়া বন্দরের উপপরিচালক মামুন তরফদার ওপারে ভারতের বন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রতিদিন কত ট্রাক পণ্য আমদানি হবে, তা অবহিত করার পর ভারত থেকে সেই সংখ্যক ট্রাক পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। ফলে ওপারে হাজার হাজার ট্রাক পণ্য আটক পড়ে থাকে।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান বলেন, বন্দরে কত ট্রাক পণ্য আমদানি হবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করেন মামুন তরফদার। তিনি বন্দরে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।

বন্দরের উপপরিচালক মামুন তরফদার বলেন, চুরির বিষয়টি নিয়ে উত্তর দেবেন ডাইরেক্টর, চিঠি সাইন করেছেন ডাইরেক্টর। আমি আপনার উত্তর দিতে বাধ্য নই।

এ বিষয়ে বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল জলিল বলেন, বন্দর থেকে পণ্য চুরির অভিযোগ পাওয়ার পর বন্দরের উপপরিচালক মেহেদী হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১