বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৯ March ২০২১

পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট অকেজো


বাগেরহাটের উপকূলীয় দুটি উপজেলা রামপাল ও মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে নির্মিত ‘স্বয়ংক্রিয় সৌরচালিত পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট’ এখন স্থানীয় জনগণের চোখের কাটায় পরিণত হয়েছে। লবণাক্ত এই অঞ্চলের দুস্থ ও হতদরিদ্র মানুষের সুপেয় পানি পাওয়ার আশার গুড়ে বালি পড়েছে। নির্মাণের পরেই অকেজো হয়ে পড়েছে অধিকাংশ পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আর জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আট কোটি টাকার এই প্রকল্পটি স্থানীয়দের সুফল পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে অজ্ঞাত কারণে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলার জন্য বাগেরহাট জেলার দুস্থ ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ’ প্রকল্পের আওতায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২টি ‘স্বয়ংক্রিয় সৌরচালিত পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট’ নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। ২০২০ সালের জুলাই মাসের দিকে মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নে প্রথম এই পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিটের নির্মান কাজ শুরু হয়। স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের না জানিয়েই ১৫টি ইউনিট নির্মাণ করা হয়। উপকারভোগীদের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়া এবং নিম্নমান সামগ্রী দিয়ে দায়সারাভাবে প্রকল্পের কাজ শুরু করার অভিযোগ উঠলে এই আসনের সংসদ সদস্য ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রি হাবিবুন নাহারকে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন। এরপর সেই ১৫টি ইউনিট ভেঙে আবার নির্মাণ করা হয়। পরবর্তিতে প্রকল্প মেয়াদ (২০২০ সালের ডিসেম্বর) পর্যন্ত মোংলায় ১৩৫টির মধ্যে ৪৪টি এবং রামপালে ৬৭টির মধ্যে ২৬টি ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নির্মাণের পর পরই এর বেশিরভাগ ইউনিট ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন-২ শাখারপত্রে প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়ন এলাকায় বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে অনুমোদিত প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট তথ্য সম্বলিত দৃশ্যমান সাইনবোর্ড স্থাপন করার নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা দেখা যায়নি। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ দেখভালের দয়িত্বে এলাকায় তেমন কাউকে দেখা মেলেনি বলে স্থানীয়রা জানান।

এ বিষয়ে মোংলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পানি বিশুদ্ধকরণ ইউনিট নির্মাণে অনিয়ম ও নির্মিত ইউনিটগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ার কথা স্বীকার করলেও অজ্ঞাত তারা কারণে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলার জন্য বাগেরহাট জেলার দুস্থ ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের সচিব শুভাশীষ সাহা জানান, করোনার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়েছে। তিনি দুবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পদাধিকার বলে প্রকল্প পরিচালক হয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, মূলত উপ-প্রকল্প পরিচালকই সবকিছু ভালো জানেন।

এই প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক (অভিযোজন) ইস্কান্দার হোসেন বলেন, কিছু কিছু অভিযোগ আমরা পেয়েছি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ার পর সমাধান করা হবে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১