আপডেট : ২৪ March ২০২১
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদের প্রথম বৈঠকেই নিলেন কৃষকদের জন্য এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। তাদের সব বকেয়া খাজনার সুদ মওকুফ করে দিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত খাজনাও মওকুফ করার ঘোষণা দিলেন। তিনি কৃষি বিপ্লব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি যুগোপযোগী ভূমি সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিলেন। জমির মালিকানার সর্বোচ্চ সিলিং ১০০ বিঘা নির্ধারণ করে উদ্বৃত্ত জমি ও খাসজমি ভূমিহীন ও প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে বণ্টনের উদ্যোগ নিলেন। পাকিস্তানি শাসন আমলে রুজু করা ১০ লাখ সার্টিফিকেট মামলা থেকে কৃষকদের মুক্তি দেন এবং তাদের সব বকেয়া ঋণ সুদসহ মওকুফ করে দেওয়া হয়। দেশের জন্য দ্রুত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু দেশের স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদদের নিয়ে গঠন করেন প্রথম পরিকল্পনা কমিশন। বিএডিসির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সরকার ভর্তুকি দিয়ে সার ও সেচযন্ত্র বিতরণের ব্যবস্থা করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি সারের ব্যবহার ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি করতে পেরেছিলেন। যেখানে ১৯৭১-৭২ সালে সারের ব্যবহার ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার টন, ১৯৭৪-৭৫ সালে তা ৩ লাখ ৫০ হাজার টনে উন্নীত হয়। নগদ ভর্তুকি ও সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে কৃষকের মাঝে সেচযন্ত্র বিক্রির ব্যবস্থা করেন। যেখানে ১৯৭১-৭২ সালে অগভীর নলকূপের সংখ্যা ছিল ৬৮৫, গভীর নলকূপের সংখ্যা ৯০৬ এবং পাওয়ার পাম্কের সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ২৪৩, তা ১৯৭৪-৭৫ সালে বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪ হাজার ২৯, ২ হাজার ৯০০ এবং ৪০ হাজারে। ১৯৭২ সালের মধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে বিনা মূল্যে অথবা নামমাত্র মূল্যে কৃষি উৎপাদনের জন্য ১৬ হাজার ১২৫ টন ধানবীজ, ৪৫৪ টন পাটবীজ ও ১ হাজার ৩৭ টন গমবীজ সরবরাহ করা হয়। প্রথম পঞ্চম বার্ষিকী (১৯৭৩-১৯৭৮) পরিকল্পনায় কৃষিতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৩১ শতাংশ। ১৯৭৪ সালে কৃষিতে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৭ শতাংশ। পুরো সময়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির জন্য প্রযুক্তি ও উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনের জন্য বঙ্গবন্ধু কৃষি গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেন। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এর আইনগত কাঠামো দিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠানে রূপ দেন তিনি। আজকের স্বায়ত্তশাসিত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ১৯৭৩-এর অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে আইনগত কাঠামো পায়। পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, কৃষি সম্ক্রসারণ অধিদপ্তর, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন সংস্থা, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন বা কাঠামোগত উন্নয়ন বঙ্গবন্ধুর হাত দিয়ে শুরু হয়। ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক মন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রণালয়
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১