আপডেট : ১৬ March ২০২১
স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত (৫০ বছর) দেশের কারাগারগুলোতে ৪৫২ জন মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত কোনো বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। ১৯৭৬ সালের পর থেকে কারাগারগুলোতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর শুরু হয়। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় ১৯৭৭ সালে। এসব বন্দিকে কোন কোন মামলায় কী কারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। ৪ মার্চের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে কারাগারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া বন্দি রয়েছেন ২০০৫ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। সংশ্লিষ্টরা জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার শাসনামলে কোনো বন্দির মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নিহত হন তিনি। ১৯৭৬ সালে তিনজন বন্দির মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়। ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে একই বছর ২৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। একই বছর এত বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নজিরবিহীন ঘটনা। এসব বন্দির মামলার তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে কারা অধিদপ্তর। ১৯৭৭ সালের পর ১৯৭৮, ১৯৮০, ১৯৮১, ১৯৮৫, ১৯৮৬, ২০০৪ এবং ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এর মধ্যে ১৯৭৮ সালে ১৭ জন, ১৯৮০ ও ৮১ সালে ১৩ জন করে বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। ১৯৮৫ সালে ১৩ জন, ১৯৮৬ সালে ২৬ জন, ২০০৪ সালে ১৩ জন এবং ২০১৬ সালে ১০ জন বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এ ছাড়া ১৯৭৯ সালে একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এরশাদের শাসনামলে ১৯৮২ সালে ছয়জন, ১৯৮৩ সালে সাতজন, ১৯৮৭ সালে একজন, ১৯৮৮ সালে দুজন, ১৯৯০ সালে একজন বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। খালেদা জিয়ার শাসনামলে ১৯৯২ ও ৯৩ সালে ৫ জন করে, ১৯৯৪ সালে দুজন বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এরপর আওয়ামী লীগ শাসনামলে ১৯৯৭ সালে দুজন ও ২০০১ সালে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ২০০২ ও ২০০৩ সালে দুজন করে, ২০০৫ সালে পাঁচজন, ২০০৬ সালে চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। ২০০৭ সালে ছয়জন ও ২০০৮ সালে আটজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। এরপর ২০০৯ সালে চারজন বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ২০১০ সালে নয়জন, ২০১১ সালে পাঁচজন, ২০১২ সালে একজন, ২০১৩ সালে দুজন, ২০১৫ সালে চারজন, ২০১৭ সালে ছয়জন, ২০১৯ সালে দুজন এবং ২০২০ সালে দুজন বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কারা কর্তৃপক্ষ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ও হাইসিকিউরিটি কারাগার, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ কয়েকটি জেলা কারাগারে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে জানান কারা কর্মকর্তারা। ২০০৬ সালের পরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বন্দিদের মধ্যে জঙ্গি ও যুদ্ধাপরাধীরাও রয়েছে। দেশের কারাগারগুলোতে অর্ধশতাধিক মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া নারীবন্দি থাকলেও গত ৫০ বছরে দেশে কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাদের যাবজ্জীবন কিংবা মুক্তি পাওয়ার ঘটনাই বেশি রয়েছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি আমাদের নয়। আদালত ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তেই বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১