বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২১ December ২০২০

সালাম কি শুধু ছোটরাই দেবে


তাসনিম হাসান মজুমদার

 

সালাম। এটি একটি আরবি শব্দ। আভিধানিক অর্থ শান্তি। ইসলাম শান্তির ধর্ম। এক মুসলমান ভাই অপর মুসলমান ভাইয়ের সাথে যখন সাক্ষাৎ করবে, একে অপরকে সালাম দেবে। তার জন্য শান্তি কামনা করবে। দোয়া করবে। সালাম দেওয়া সুন্নাত। আর সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। কেউ যদি কারো সাক্ষাতে সালাম না দেয়, তাহলে পাপ হবে না। কিন্তু, কেউ যদি সালাম দেয় আর আপনি তার উত্তর না দেন তাহলে আপনি ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার কারণে গুনাহগার হবেন। আমদের মুসলিম সমাজে সালামের প্রচলন রয়েছে। এক মুসলমান অপর মুসলমানকে অভিবাদন স্বরূপ সালাম দিয়ে থাকে। পুরো পৃথিবীর মানুষ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ সুন্নতটি পালন করে থাকে। আমরা যখন মোবাইলে কারো সাথে কথা বলি, সালাম দিয়েই কথা বলা শুরু করি। ক্লাসে যখন শিক্ষক আসেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে সালাম প্রদান করে। আবার পাঠদান শেষে শিক্ষক চলে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা সালাম দেয়। অফিসে বসকে তার অধীন কর্মচারীরা দেখা হলে সালাম দিয়ে থাকে। কোনো রেষ্টুরেন্টে গেলে ওয়েটাররা ভোক্তাদের সালাম দিয়ে থাকে। সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা যখন অফিসারকে দেখে তখনই স্যালুট (সালাম) দিয়ে থাকে। এটা সামরিক বাহিনীর নিয়মেরই অংশ। কিন্ত, সালামের এই ব্যাপক প্রচার-প্রসারকে কুচক্রী মহল নিষিদ্ধ করতে চায়। সালামকে বৈধ মনে করে না।

সালাম রাসুলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুন্নাত। অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। অস্বীকার করলে আপনি-ই ঈমানহারা হবেন। আর ঈমান ব্যতীত মুনকার-নাকীরের সাথে  মোলাকাত করলে কঠিন অবস্থা হবে কবরের দিনগুলো আপনার। জিল্লতি ছাড়া কপালে কিছুই মিলবে না। সারা জীবন আমরা সালাম দিয়ে এসেছি। যতদিন বেঁচে থাকব সালাম দেব। দিতে হবে। সালামের এত আদবের মাঝে কিছু ব্যতিক্রম দেখা যায়। কিছু বয়স্ক মানুষ মনে করে থাকেন, সালাম শুধু ছোটরাই দেবে। সালাম দেওয়ার দায়িত্ব কি শুধু ছোটদের? কিছু মুরব্বিদের সালাম দিলে বুঝার উপায় নেই। তারা আদৌও সালামের জবাব দিয়েছে কিনা। তখন তাদের মুখে তালা পড়ে যায়। বাচ্চাকাচ্চা বিরক্ত হয়ে যখন ওই মুরব্বিদের সালাম দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তখন আবার তাদের ইজ্জতভ্রষ্ট হয়। আরে! এই ছেলেটা বেয়াদব। আমার সামনে দিয়ে গেল আমাকে সালাম দিল না। আমি ওর কত বড়! ওর মা-বাবার বিয়েও দেখেছি আমি। আর এ ছেলে আমাকে সালাম না দিয়ে চলে গেল।

সালাম দিলে নব্বই নেকী পাওয়া যায়। আর জবাবে দশ নেকী। সালাম না দিলে গুনাহ নেই। কিন্তু, জবাব না দিলে ওয়াজিব তরক করার কারণে গুনাহগার হতে হয়। কিছু মুরব্বিরা ধরেই নিয়েছে সালাম শুধু ছোটরাই  দেবে। আমরা বুড়ো হয়ে গেছি। আমাদের সালাম দেওয়ার দরকার নেই। আসলেই কি তাই? ইসলাম কী বলে? ছোটরা বড়দের সালাম দেবে। অবশ্যই দেবে। তবে বয়স্করাও ছোটদের সালাম দিলে খারাপ কোথায়? ছোটদের সালাম দিলে, ছোটরা আরো বিনয়ী হবে। যেসব শিশুরা সালামের সাথে পরিচিত নয়, তারাও সালাম দিতে শিখবে। ছোটরা বড়দের সালাম দেবে। আপনারা যারা উপরস্থ পদে চাকরি করেন। আপনাদের নিচের পদের কাউকে সালাম দিয়ে দেখেন কত খুশি হয়। কখনো রিক্সাচালককে সালাম দিয়েছেন? রিক্সাচালককে সালাম দেন। রাস্তার ফকিরকে সালাম দিতে পারেন। আপনার অহংকার কমবে এবং ওরা আপনার জন্য দোয়া করবে। কখন কবে কার দোয়ার বদৌলতে আমাদের জীবন বদলে যায় বলা যায় না। তাই বেশি বেশি সালাম দিতে হবে। আর যে সব বয়স্করা ছোটদের সালাম নিতে অপমানবোধ করেন। আপনাদের এই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসা দরকার। বের হয়ে আসতেই হবে। কারণ ছোটদের সালামের জবাব না দিলে ওরা কষ্ট পায়। একজন মুমিন হয়ে অপর মুমিনকে কষ্ট দেওয়া বৈধ নয়। তাই সালামের প্রচলন বাড়াতে হবে। সালাম আমাদের জীবনে শান্তি বয়ে আনুক।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১