বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৫ August ২০২০

ঘাট ফিরিয়ে না দিলে চসিক কার্যালয় ঘেরাও করবে সাম্পান মাঝিরা


স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় নির্দেশ সত্ত্বেও জন্মগত পেশাদার পাটনিজীবি (সাম্পান মাঝি) সমিতিকে ঘাট ইজারা না দেয়ার প্রতিবাদে নিজেদের সাম্পান নিয়ে কর্ণফুলী নদীতে দিনব্যাপী অনশন করছে আটটি মাঝিদের সংগঠন।

মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত নগরীর সদরঘাটে নিজেদের সাম্পান নিয়ে নদীতে অনশন করে তিন শতাধিক সাম্পান মাঝি। মাঝিদের অনশনের কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা সকল ঘাট বন্ধ রাখা হয়।

অনশন সমাবেশে বক্তারা বলেন, আড়াই হাজর বছর আগের সাম্পান ও সাম্পান মাঝি চট্টগ্রামের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে জাহাজ মালিক সমিতির সভাপতি হাজী শফিক আহমদকে বাংলাবাজর ঘাট ও ব্যবসায়ীদের ১১ ও ১৪ নম্বর ঘাট ইজারা দিয়ে মাঝিদের ঘাট ছাড়া করাটা কিছুতেই মেনে নেবে না চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ।

অনশনকারী সাম্পান মাঝিরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মাঝিদের ঘাট ইজারা না দিলে সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও ও আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন।

অনশন কর্মসূচীতে মাঝিদের সাথে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা নাজিমুদ্দিন শ্যামল, হাসান ফেরদৌস, কর্ণফুলী গবেষক প্রফেসর ড. ইদ্রিচ আলী, চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাংলাবাজার সাম্পান মাঝি কল্যাণ সভাপতি মোহাম্মদ লোকমান দয়াল, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউছুপ, অর্থ সম্পাদক জসীম উদ্দিন, সদরঘাট সাম্পান সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সহ সভাপতি নাজির আলী, সাধারণ সম্পাদক নূর আহমদ, ইছানগর সদরঘাট সাম্পান সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, অর্থ সম্পাদক ফরিদ আহমদ, কর্ণফুলী ফিশিং জাহাজ যাত্রী পারাপার সাম্পান সমিতির সহ সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, ১১ নম্বর মাতব্বর ঘাট সাম্পান সমিতির সভাপতি আবদুর শুক্কুর, ১৪ নম্বর গুচ্ছ গ্রাম সাম্পান সমিতির মোহাম্মদ করিম ও মনির আহমদ প্রমুখ।

জানা যায়, গত ১লা বৈশাখ পেশাগত সাম্পান মাঝি (পাটনিজীবি) থেকে ঘাট কেড়ে নিয়ে পাটনীজীবি নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ইজারা দেয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম। ঘাটহারা মাঝিরা অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে বিগত ২৯ এপ্রিল ২০২০ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রশাসন-২ শাখা কতৃক প্রেরীত পত্রে উপসচিব মোহাম্মদ ফজলে আজিম পেশাদার জন্মগত পাটনিজীবি সমিতিকে ঘাট ইজারা দেয়ার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন।

তৎকালীন মেয়র আজম নাছির উদ্দিন ঘাট মাঝিদের ইজারা দেওয়ার অনুরোধ জানালেও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এই বিষয়ে পুনঃরায় আইনি মতামতের জন্য নির্দেশনাটি চসিক আইন কর্মকর্তার নিকট প্রেরন করেন।

এরপর বিগত ছয় মাসেও মাঝিদের ঘাট ফিরিয়ে দেয়নি চসিক। করোনার কারণে সাম্পান মাঝিরা এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। তার উপর নিজেদের ঘাট হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে হাজারো সাম্পান মাঝি। অনেকে বাপ দাদা তিনপুরুষের এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে কর্ণফুলী থেকে সাম্পান চিরতরে হারিয়ে যাবে বলে জানান মাঝিদের আন্দোলনের সহযাত্রী চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান।

তিনি বলেন, চসিক মাঝি থেকে ঘাট কেড়ে নিয়ে চট্টগ্রামের কৃষ্টি সংস্কৃতির পরিপন্থী কাজ করছে। যা কিছুতেই মেনে নেয়া যায়না। আন্দোলনের আহ্বায়ক কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী বলেন, ২০০৩ সালের পাটনিজীবি নীতিমালা তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে মাঝিদের ঘাটছাড়া করেছে চসিক। আামদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় দিনব্যাপী অনশনের করতে হচ্ছে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১