আপডেট : ১৭ July ২০২০
মৌসুমের শুরুতেই পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আমন ধানের বীজ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। উপজেলায় ৬০০ টন আমন বীজের চাহিদা থাকলেও কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের প্রদর্শনী বাবদ দেয়া হয়েছে মাত্র ২ হাজার ৩৫০ কেজি বীজ ধান। আর বিএডিসি থেকে ডিলারদের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ৪৮ টন। বীজের দাবিতে কৃষকরা মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করে। কিন্তু বীজ ধান না পেয়ে বীজতলা তৈরি করতে না পেরে হাজার হাজার কৃষক এখনও চাষাবাদ শুরু করতে পারেনি। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, বীজ ধান সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন বর্ষা মেীসুম শেষ হওয়ার আগেই কৃষকদের বীজ ধান সরবরাহ করা হবে। কৃষক জয়নাল আবেদীন, আমিন মিয়া জানান, বীজ ধান না পেয়ে আশি ভাগ কৃষক এখনও বীজতলা তৈরি করতে পারেনি। এ কারনে শুরু হয়নি চাষাবাদ। এ বীজের দাবিতে কৃষকরা গত ৭ জুলাই কলাপাড়া পৌর শহরে মানববন্ধন করে। মানববন্ধন শেষে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। কিন্তু বীজের দোকানগুলোতে এখনও বীজ শুন্য। ভূক্তভোগী কৃষকরা জানায়, আমন মেীসুমে কলাপাড়া ব্রি ২৩, ৫২ ও ৪৯ জাতের ধানের বেশি চাষাবাদ হয়। কিন্তু বিএডিসির বীজ বাজারে নেই। গত বছর আমন মেীসুমে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে ৭০ ভাগ ধানের ক্ষতি হয়। এ কারনে অধিকাংশ কৃষক বীজ ধান সংগ্রহ করতে পারেনি। যারা বীজ ধান সংগ্রহ করতে পেরেছে তারা চাষাবাদ ও বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হলেও অধিকাংশ জমিতে এখনও চাষাবাদ শুরু করতে পারেনি কৃষকরা। এ কারণে অধিকাংশ ফষলের মাঠে এখন কৃষক শুন্য। নেই চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর ও গরুর হাল। কৃষি বিভাগ ও বীজের ডিলারদের সূত্র মতে, কলাপাড়ায় আমন মেীসুমে ৬০০ মেট্রিক টন বীজের চাহিদা। কিন্তু বিএডিসি থেকে পাঁচ ডিলারকে সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ৪৮ টন। এছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন প্রদর্শনী প্লটের জন্য ২ হাজার ৩৫০ কেজি বীজ ধান সরবরাহ করেছে। কলাপাড়ায় কৃষি বিভাগের ৩৮টি কৃষি ব্লকের অধিকাংশ জমিতে আমন চাষাবাদ হয। এক ফষলী নির্ভর এই কৃষকরা গত বছর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়লেও এ বছর আবার ঘুরে দাড়াতে চাষাবাদের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু বীজ সংকটে বীজতলা তৈরির সময় অতিবাহিত হলেও এখন বীজ সংগ্রহ করতে পারেনি। বীজ সংকটের কথা স্বীকার করে বিএডিসির ডিলার গৌতম হাওলাদার বলেন, তাদের চাহিদার বিপরীতে বিএনডিসি থেকে বীজ সরবরাহ না করায় কৃষকরা বেশি দামে বিভিন্ন নামহীন কোম্পানীর বীজ সংগ্রহ করছে। এতে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশংকা করছে তারা। বীজ সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে কলাপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বীজের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া এ বছর বেশি বীজের চাহিদার মূল কারন গত বছর বুলবুলে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা বীজ ধান সংগ্রহ করতে পারে নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন, কৃষকরা আমন বীজের দাবিতে তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। বিষয়টি তিঁনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করেছেন। এ বর্ষা মেীসুম শেষ হওয়ার আগেই কৃষকদের বীজ সরবরাহ করা হবে।
কলাপাড়া উপজেলায় ৩৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়। প্রতিবছর কৃষকরা প্রায় ৭০ ভাগ বীজ নিজেরাই সংগ্রহ করলেও গত বছর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারনে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা বীজ সংগ্রহ করতে পারেনি। তাই মেীসুমের শুরুতেই বীজ সংকট দেখা দিয়েছে। সরকার নির্ধারিত কলাপাড়ায় বিএডিসির পাঁচজন ডিলার থাকলেও সেখানে পর্যাপ্ত বীজ ধান সরবরাহ না থাকায় প্রতিদিন শতশত কৃষক বীজের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসসহ বীজের দোকানগুলোতে ভীড় করছে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১