আপডেট : ৩০ May ২০২০
দেশে সামুদ্রিক মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এর ফলে কক্সবাজারের ৪৮ হাজার জেলে কর্মহীন হয়ে চরম অর্থ সংকটে পড়েছে। এমনিতে এপ্রিল মাসের শুরু হতে কক্সবাজারে চলছে লকডাউন। এর উপর সামুদ্রিক মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জেলে পরিবারগুলোতে দুর্দশা বেড়েছে। বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় নিষেধাজ্ঞা ২০ মে থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত চলবে। এর আগে মৎস্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামুদ্রিক মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও মজুদ সংরক্ষণ এবং সহনশীল মাছ আহরণ নিশ্চিত করতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক নৌযান এবং বাণিজ্যিক ট্রলার দিয়ে মাছ ও ক্রাস্টাশিয়ান্স আহরণ করা যাবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, প্রতি বছরের মতো এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে যথাযথ প্রচার চালিয়ে স্থানীয় প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে। মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি দিয়ে এই কার্যক্রম পরিচালনারও নির্দেশ রয়েছে। কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম খালেকুজ্জামান জানিয়েছেন , ‘কক্সবাজার জেলায় ৪৮ হাজার ৩৯২ জন তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে। যারা সামুদ্রিক মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। পরিবারের ভরন-পোষণ চলে তাদের সামুদ্রিক মাছ আহরনের উপর। সামুদ্রিক মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া এসব জেলে পরিবারগুলোকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে কক্সবাজারে ইতোমধ্যে জনপ্রতি ৫৬ কেজি চাল (ভিজিএফ) সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।’ একদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে লকডাউন চলছে। তার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এতে জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে চলছে আর্থিক টানাপোড়েন। সরকারের তরফ হতে বলা হয়েছে, তাদেও জীবন জীবিকা যাতে স্বাভাবিক থাকে সে জন্য সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হবে। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ‘সরকার প্রদত্ত ভিজিএফ চাল ইতোমধ্যে কর্মহীন জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে বিতরণ শুরু করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত যদি সামুদ্রিক মাছ ধরা বন্ধ রাখা যায়, তাহলে সাগরে মাছের বিশাল আধার সৃষ্টি হবে। যা নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী সময়ে জেলেদের ভাগ্য ফেরাতে কাজে আসবে। ’ এদিকে সরকারী আদেশ না মেনে কেউ কেউ সাগরে মাছ ধরা অব্যাহত রেখেছে। ইতিমধ্যে কক্সবাজারের কয়েকটি স্থানে টাস্কফোস অভিযান পরিচালনা করে টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর ঘাট হতে প্রায় দুই হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দিয়েছে এবং কিছু সামুদ্রিক মাছ জব্দ করে এতিম খানায় প্রদান করেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ঠরা। এদিকে নাফনদী হতেও মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে তিন বছর ধরে। সরকার মিয়ানমার হতে ইয়াবাসহ মাদক ও মানব পাচার বা অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ২০১৭ সালের আগস্ট মাস হতে নাফনদীতে মাছ ধরা বন্ধ করে দেয়। এরপর হতে স্থানীয় কয়েক হাজার জেলে পরিবার জীবন জীবিকা নিয়ে দারুন সংকটে রয়েছে। সীমিত সময়ের জন্য নাফনদীতে মাছ ধরার জন্য অনুমতি আদায়ে বেশ কিছু সভা-সমাবেশও করে জেলেরা। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে এখনো আগের সেই সিদ্ধান্ত হতে নড়েনি। টেকনাফ জালিয়া পাড়ার জেলে নেতা মুফিজুর রহমান কালা জানিয়েছেন, ‘নাফনদীর মাছ ধরা জেলে পরিবার গুলো দারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। যদিও বা সরকারের পক্ষ হতে মাঝেমধ্যে ভিজিএফ চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১