বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৯ February ২০২০

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর হচ্ছে না


জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাড়া না পাওয়ায় ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার। তদেরকে নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জোর দিচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, আপাতত আমরা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের প্রতি জোর দিচ্ছি, ভাসানচরে স্থানান্তরে নয়।

তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে গাদাগাদি করে বসবাস করছে। তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা সাময়িকভাবে ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের আলাপ-আলোচনা চলছে। এখন আমরা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছি না।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের তিন পক্ষের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনেক বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। অনেক বিষয়ে একমতে আসতে আলোচনা চলছে। তিন পক্ষের মধ্যে দ্রুত আরো বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগেও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা এ দেশে আশ্রয় নিয়েছে। সব মিলিয়ে সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবিরে বসবাস করছে।

২০১৮ সালে সরকার এই শরণার্থী শিবির থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে শুরু থেকেই এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে আসছে জাতিসংঘ।

সম্প্রতি ভাসানচর পরিদর্শন করে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, সেখানে রোহিঙ্গাদের নয়, বাংলাদেশের গৃহহীনদের পাঠানো উচিত। এখন সরকার সে কথাই ভাববে। ভাসানচর এত সুন্দর জায়গা, সেখানে রোহিঙ্গাদের কেন পাঠানো হবে? বরং দেশের কিছু মানুষকে সেখানে পাঠানো উচিত। এটা সত্যি খুব সুন্দর এবং সম্ভাবনার জায়গা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, আমি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একসঙ্গে ভাসানচর পরিদর্শন করেছিলাম। ফিরে এসে তিনি যেটা বলেছেন সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত মত। এটা সরকারের বক্তব্য নয়। সরকার তেমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি ভাসানচর পরিদর্শন করে বিস্তারিত কারিগরি মূল্যায়নের আগে রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর না করার অনুরোধ জানান।

মিয়ানমার সীমান্তে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চেকপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে নতুন করে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। তখন থেকে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১১ লাখেরও বেশি নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রয়েছে।

পালিয়ে এসে রোহিঙ্গাদের অধিকাংশ কক্সবাজারের শরাণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়। পরে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে তাদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রাথমিকভাবে এক লাখ রোহিঙ্গার পুনর্বাসনের জন্য ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১