বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৭ February ২০২০

বাড়ছেই সরু চালের দাম

আরো অস্থিরতার শঙ্কা


খোলাবাজারে মিনিকেট চাল কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি সর্বনিম্ন ৫৫ টাকায়। আর সর্বোচ্চ উঠেছে ৬০ টাকা পর্যন্ত। গত মাসে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫২ টাকায় পাওয়া যেত এ চাল। এছাড়া আরেক পদের সরু চাল নাজিরশাইলের দাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকায় উঠেছে। রাজধানীতে জনপ্রিয় এ চালগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে রয়েছে জনগণ।

চালের এ দরবৃদ্ধি নতুন নয়। গত এক মাসে দফায় দফায় দাম বেড়ে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় যে, ব্যবসায়ীরা এরপরও বলছেন দাম আরো কিছুটা বাড়তে পারে। এজন্য মজুত স্বল্পতাকে দায়ী করছেন তারা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের ধান-চালের বড় মোকাম নওগাঁয় পাইকারিতে চালের দাম আরো বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সরু চালের দাম কেজিতে এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে মাসের ব্যবধানে ওই এলাকার মোকামগুলোতেও কেজিপ্রতি দরবৃদ্ধি প্রায় ৫ টাকায় ঠেকেছে। এছাড়া কুষ্টিয়ার খাজানগর মোকামে চালের দাম অস্থিতিশীল, তবে মোটা চালের দাম কম।

গতকাল নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোধ বরণ সাহা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, প্রতি বছরই এ সময়ে ধানের সরবরাহ কম থাকে। ফলে যেসব ব্যবসায়ী বেশি করে চাল মজুত রেখেছিলেন, তারা এখন বেশি দামে বিক্রি করছেন। পরিস্থিতি আরো কিছুটা খরাপ হতে পারে। কারণ নতুন সরু চালের সরবরাহ আসবে বৈশাখের শুরুতে (এপ্রিলের শেষে)। এর আগে আরো কিছুটা দাম বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। 

গত মাসে চাল রপ্তানির ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে দেশের বাজারে চালের দাম বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে চাল রপ্তানির ব্যাপারে আপত্তি তোলা হয়েছে। তা আমলে নিয়ে আপাতত কোনো প্রতিষ্ঠানকে চাল রপ্তানির অনুমোদন দিচ্ছে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে রপ্তানির খবরে দাম বাড়লেও বন্ধের খবরে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। অর্থাৎ দাম কমেনি।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের মতে, গত এক মাসে শুধু সরু চালের দামই ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়ে গেছে। সরু চালের কেজি ৫৪ থেকে ৫৫ টাকার সরু চাল এখন ৬০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আর এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ২ টাকা।

অন্যদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বলছে, সরকারি গুদামে বর্তমানে ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টন চাল ও ৩ লাখ ৬২ হাজার টন গম মজুত আছে। মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘খাদ্যশস্যের মজুত সন্তোষজনক, মাসিক চাহিদা ও বিতরণ পরিকল্পনার তুলনায় পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এ মুহূর্তে খাদ্যশস্যের কোনো ঘাটতি নেই বা ঘাটতির কোনো আশঙ্কা নেই।’

অবশ্য এমন পরিস্থিতিতেও চালের দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় সরকার। এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেছেন, চালের দাম আসলে বাড়েনি। যদি বেড়েও থাকে, চিকন চালের দাম কেজিতে ২-১ টাকা বেড়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তারা তো চিকন চাল খায় না, মোটা চাল খায়। বরং সরু চালের দাম বাড়ায় কৃষক ফসলের ভালো দাম পাচ্ছে।

এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার সরু চালের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বেড়েছে। আগামী রমজান মাসের আগে বাজার আরো অস্থিতিশীল হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। মজুত থাকা সত্ত্বেও এমন কেন হচ্ছে তা সরকারের অনুসন্ধান করে দেখা উচিত।

এদিকে গত বছরের শেষে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) দেশের চালের বাজারের ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। তাতে চালের বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের প্রমাণ মিলেছে। বিআইডিএস বলছে, ধান-চালের বাজারে ৯৪৯টি অটো চালকল নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে। বাজারে কত দামে ধান-চাল বিক্রি হবে, তা ওই বড় চালকলগুলোর ওপর নির্ভর করে। এমনকি চাল আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রেও তাদের ভূমিকা প্রধান। এগুলোর মধ্যে ৫০টি চালকল ধান-চালের দাম নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১