নিজস্ব বেতন কাঠামো বাতিলের প্রতিবাদে গতকাল রোববার ব্যাংকটির পর্ষদ সভা ঘিরে বিক্ষোভ করেছেন কর্মীরা। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা বোর্ডের সদস্য ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবরুদ্ধ করেন। তবে ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে অনড়। বোর্ড সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবে না। 

জানা গেছে, গতকাল দুপুর থেকেই কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। কিন্তু পর্ষদ সভায় ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসেনি। ফলে তারা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আলমকে অবরুদ্ধ করেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন ব্যাংকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে সার্কুলার জারি করেছে বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এর ফলে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতন কমে গেছে। চলতি মাসের ২২ তারিখ থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর করে গত রোববার বিকালে সার্কুলার জারি করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ব্যাংকটির কর্মীরা। তারা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে গত সোমবার অবস্থান নেন।

জানতে চাইলে বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ বাংলাদেশের খবরকে এর আগে টেলিফোনে বলেন, সব যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে অন্যায় কিছু করা হয়নি। তারা আন্দোলন করে ভুল করছেন। কেউ হয়তো তাদের ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছেন। সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার সুযোগ খুব একটা নেই।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, বেসিক ব্যাংকে গত ৭ বছর ক্রমাগত লোকসান হওয়ায় বিদ্যমান অতিরিক্ত বেতন-ভাতা ব্যাংকের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিধায় ব্যাংকের বিদ্যমান বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুবিধাদি বাতিল করা হলো।

তবে বিষয়টি সব পর্যায়ে জানাজানির পর সোমবার সকালে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কর্মচারীরা। তারা অবিলম্বে নির্দেশনা বাতিলের দাবিতে এমডির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংকটিতে বিভিন্ন সময়ে নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। আবেদন না করেই চাকরি পেয়েছেন। চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ, উত্তরপত্র অতিমূল্যায়িত করে নম্বর দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকে চাকরি পেয়েছেন অনেকে। নিয়োগ হওয়া এক হাজার ১৭৩ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়ার তদন্ত দাবি করে উচ্চ আদালতে রিট করা হলো। রিট আবেদনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি একসময় শক্ত আর্থিক ভিত্তির ওপর থাকলেও ঋণ বিতরণসহ ব্যবস্থাপনা ক্রটির কারণে এর অবনতি হয়। দীর্ঘদিন চলছে লোকসানে। ব্যাংকটি যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলাউদ্দিন এ মজিদ। বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা বলছেন, বেসিক ব্যাংকের নিজস্ব বেতন কাঠামো পুনর্বহাল করতে হবে।