বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৯ December ২০১৯

মানবাধিকার ও বিশ্ব মানবতা


আবদুস সালাম

 

 

বিশ্ব চলছে আজ আপন স্বার্থে। যেদিকে গেলে আর্থিক বা ক্ষমতার লাভ, সেদিকেই ছুটছে ক্ষমতাসীনরা। ন্যায়নীতির তোয়াক্কা না করে চলছে দমনপীড়ন, প্রয়োজনে খুন, ধর্ষণ, জাতি নিধনের  মতো অন্যায় গর্হিত ঘটনাসমূহ। বিশেষ করে মোড়লেরা ব্যাগ ভরতে ছুটছে এদিক-সেদিক, প্রয়োজনে মানবতার বুলি ছুড়ে মানবতাহীন কাজ বৈধভাবে করে। মানুষের জীবনের মূল্য যেন তুচ্ছ। বিশেষ করে আর্থিকভাবে দুর্বল দেশগুলোর প্রতি চরম অন্যায়-অত্যাচার চলছেই। একদিকে খাবার না পেয়ে নারী ও শিশু মারা যাচ্ছে, অপরদিকে চলছে আধুনিকতার বাজনা, যা শুধু মানবতাবিরোধীই নয়, চরম অন্যায়। যেমন সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, কাশ্মীর, মিয়ানমার, চীনে উইঘুর সম্প্রদায়, ইয়েমেন, সোমালিয়ায় খাদ্যাভাব; অপরদিকে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার মতো রাষ্ট্র অস্ত্রের দিকে চোখ, আর পরের সম্পদ হরণের তৃষ্ণা যা মানবিক সংকটে ফেলে দিয়েছে। পক্ষপাত রাজনীতি আর অর্থের লোভে বিলুপ্ত হচ্ছে মনুষ্যত্ব, ফলে সংকট দেখা দিচ্ছে দরিদ্র দেশগুলোতে। ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে শিশুরা যার চিত্র উঠে আসছে দেশে দেশে শরণার্থী শিবির থেকে। একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় হুমকির মুখে অগ্রসরমান অপরদিকে মানবতা ধ্বংসের পথে হাটলে বিশ্ব বসবাসের অনুপযোগী হবে অতি দ্রুতই।

মানুষ মাত্রই বাঁচার অধিকার নিয়ে জন্মে, কিন্তু সে অধিকার হরণ করে পরের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়া চরম অন্যায়ের। অস্তিত্ব সংকটের দরুন সৃষ্টি হচ্ছে বা হবে নানা রকম অপরাধ বা সন্ত্রাসের জন্ম, যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ফল ভোগ সবাইকে করতে হবে, হচ্ছেও কমবেশি। সাধারণ মানুষের বাঁচার অধিকার সংরক্ষণের জন্য গঠিত হয়েছে নানা সংগঠন কিন্তু চাপে আর স্বার্থের ব্যবহারে সেগুলোর উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে, যেমন জাতিসংঘ। ভেটো নামক একপ্রকার নিন্দনীয় ক্ষমতার ফলে চাটুকাররা সুন্দরভাবে এগিয়ে গেলেও সংকটে পড়ছে সাধারণ দেশগুলো। যার ফল যুদ্ধ বন্ধ না হয়ে নতুন করে যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ায় মানবাধিকার সংগঠনগুলোও নাভিশ্বাসে পৌঁছেছে।

মানুষ যে মানবতার পক্ষে নেই তা নয়। কিন্তু সে সংখ্যা যদি বেশি হয় এবং ঐক্য যদি না থাকে, তবে সে মানবতার বুলি সংবাদ সম্মেলন পর্যন্তই। বাস্তবায়নের ধারেও ভিড়বে না। পরের স্বার্থে যারা ব্যবহূত হচ্ছে, তাদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে, দিতে হবে ঐক্যের ডাক। আর সে ডাকে যদি মানবতাবাদীরা জোট বাধে, তবে বিশ্ব থেকে অন্যায়-অত্যাচার বন্ধ হবে, মানবতা বিস্তৃত হবে, ক্ষুধার্তরা খাদ্য পাবে, গৃহহীনেরা পাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই। প্রতি বছর পালিত হয়ে থাকে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এ বছরও পালিত হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের সাধারণ মানুষের কতটুকু রাভ হয়েছে এতে? কাজেই প্রয়োজন ঐক্য আর ভ্রাতৃত্বের সম্মিলন। আর এর মাধ্যমেই গুড়িয়ে দিতে হবে অত্যাচারীর কালো হাত, কেটে দিতে হবে তাদের লম্বা জিহবা। পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য করে বাঁচার অধিকার আবার নিশ্চিত করতে হবে আমাদেরই।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১