আপডেট : ০১ December ২০১৯
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ ও ২০২১ সালকে ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বছরব্যাপী নানা অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি পালন করা হবে দেশব্যাপী। জাতির পিতাকে ঘিরে বিশেষ এই আয়োজনে সম্পৃক্ত হচ্ছে ইউনেস্কো। আর এই বছরই বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) তার কর্ম এলাকার শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে। এ লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংস্থাটি। গত নির্বাচনী ইশতেহারে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর ইশতেহার বাস্তবায়ন করছে আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে বিআরইবি এখন সফলতার দ্বারপ্রান্তে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ দেশের সার্বিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। সংস্থাটির আওতাধীন ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই চালিকা শক্তি হিসেবে ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ হয়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা প্রদান করছেন। এতে গ্রাহক ভোগান্তি অনেকটা কমে গেছে। বিগত ৫ বছরের বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের উদ্যোগে এডিবি বাস্তবায়নের হার ছিল প্রায় শতভাগ। বাংলাদেশের ৩ কোটি ৫৩ লাখ গ্রাহকের মধ্যে কেবল বিআরইবির সঙ্গে ২ কোটি ৭৫ লাখ। ‘মুজিববর্ষে’ বিআরইবি ভৌগোলিক এলাকার শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করবে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের ৯৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। কমেছে বিদ্যুতের ঘাটতিও। দেশের ৭৪ হাজার ৩৬০টি গ্রাম শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায়, যা মোট গ্রামের ৮৮ শতাংশ। ইতোমধ্যে ৩৬১টি উপজেলা (৭৮%) শতভাগ বিদ্যুতায়িত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শতভাগ বিদ্যুতায়িত ২১১টি উপজেলা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। অবশিষ্ট গ্রাম ও উপজেলার ৭০ শতাংশ থেকে ৯৫ শতাংশ বিদ্যুতায়িত হয়েছে, যা ২০২০ সালের মধ্যে শতভাগ সম্পন্ন হবে। ৪ লাখ ৭২ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন এবং ১২ হাজার ৪৮৫ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন ১ হাজার ৩টি উপকেন্দ্রসংবলিত সুবিশাল পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বর্তমানে সিস্টেম লস মাত্র ১০ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা ২০০৮ সালে ছিল ১৮ শতাংশ। এ স্বল্প সময়ের মধ্যে সিস্টেম লস প্রায় ৭ দশমিক ০৯ শতাংশ গ্রাস পেয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ সেচ সংযোগের মাধ্যমে দেশের প্রায় ৫৫ দশমিক ৫৬ লাখ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে এবং দেশে খাদ্য উৎপাদন ব্যাপক পরিমাণে বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্রায় ১৯ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৮৭ হাজার ৬১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কারণে কম্পিউটার, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও অন্যান্য আধুনিক উপকরণ ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৩ লাখ ৪০ হাজার মসজিদ, মন্দির ও গির্জাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করায় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন সুন্দর ও সহজতর হচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষত সৌরশক্তির ব্যবহার প্রসারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বাংলাদেশে পথিকৃৎ। ১৯৯৩ সালে একটি প্রকল্পের আওতায় ১৫ হাজার ২৫০টি সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে বিআরইবি প্রথম সোলার হোম সিস্টেম কার্যক্রম হাতে নেয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অত্যন্ত দ্রুততম সময়ে ৩০৮ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করে বিআরইবির উদ্যোগে ১১ হাজার ৮৮২টি পরিবারকে ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন, গৃহহীন অসহায় জনগণকে পুনর্বাসিত করার জন্য ৯১৯টি প্রকল্প গ্রামে ১৯ হাজার ৪৭৮টি পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের কাজ চলছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহের সিংহভাগই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসমূহের ভৌগোলিক এলাকায় অবস্থিত। এসব অর্থনৈতিক জোনে নিরবচ্ছিন্ন এবং গুণগত মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে বৈদ্যুতিক অবকাঠামো নির্মাণ এবং বিদ্যমান অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১