আপডেট : ১৭ September ২০১৯
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের(চবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম শাটল ট্রেন। সেপ্টেম্বর ১ তারিখে শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের পর থেকে আজ পর্যন্ত নিয়মিত বিপর্যয়ে চলছে এটি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। অর্ধেকমাস জুড়ে টানা বিলম্বে ট্রেন যাত্রা করায় বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। সঠিক সময়ে ক্লাস পরীক্ষায় উপস্থিত ও গন্তব্যে না পৌঁছাতাতে পেরে সময় ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবারের ট্রেন শিডিউলের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, শহরের বটতলী স্টেশন থেকে নির্ধারিত সময় সাড়ে ৭টার ট্রন ৭টা ৫০ মিনিটে, ৮টার ট্রেন ৮টা ৩৫ মিনিটে, ৮টা ৩০মিনিটের ট্রেন ৮টা ৫০ মিনিটে ছেড়েছে। এতে করে ক্লাস ও পরীক্ষায় ঠিক সময়ে উপস্থিত থাকতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। ফলে পাঠকার্যক্রম ও পরীক্ষার হলে পৌছাতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। অন্যদিকে বিকাল বেলার ট্রেন শিডিউল লক্ষ্য করলেও একই চিত্র ফুটে উঠে। ক্ষেত্রবিশেষে ৪৫মিনিট থেকে তারও বেশি সময় দেরী হচ্ছে ট্রেন ছাড়তে। ফলে বাসায় ফেরা, টিউশনে গমন কিংবা শিক্ষানবিশ চাকরীধারীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। ২ সেপ্টেম্বর অবরোধ প্রত্যাহারের পর ট্রেন চলাচলের ব্যাপারে রেলওয়ের দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়। ওইদিন নির্ধারিত সময়ের ২ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে শাটল। ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-আফগানিস্থান টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচে অংশ নেয়া খেলোয়াড়দের যাতায়াতের কারণ দেখিয়ে ও শাটল দেরিতে ছাড়ে। ১৫ সেপ্টেম্বর দুই নাম্বার গেইট এলাকায় একটি ট্রেনের বগি লাইন চ্যুত হওয়ায় শাটল ট্রেন যাতায়াত করে ষোলশহর স্টেশনের ৩নং প্লাটফর্ম দিয়ে। হঠাৎ করে শহরগামী আড়াইটার শাটল ট্রেন এই প্লাটফর্ম দিয়ে গেলে লাইনের পাশে রাখা সরঞ্জামে লেগে শারমিন আক্তার নামে সমাজতত্ত্ব বিভাগের এক শিক্ষার্থীর পায়ের আঙ্গুল কাটা পড়ে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর শারমিন আক্তার এখন আশঙ্কামুক্ত বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণআন্দোলনের পর শাটলের বগি বৃদ্ধি করে চবি প্রশাসন। পরবর্তীতে ৯টি বগিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কিছুটা কমলেও সাম্প্রতিক সময়ে বগি কমিয়ে ৭টাতে নামিয়ে আনা হয়। ফলে তীব্র ভীড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে, ছাঁদে চড়ে কিংবা দরজায় বাদুড় ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সৃষ্ট ভোগান্তির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আইরিনা রহমান বলেন, শিডিউল না মানার কারণে সাধারণ গণপরিবহনে চড়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে আমাদের। এতে করে বাড়তি সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে। দেরিতে বাসায় ফেরার কারণে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। আরেক শিক্ষার্থী বলেন, একটা পার্ট টাইন চাকরি করি। দেরিতে যাওয়ায় বকা শুনতে হয়। চাকরি হারানোর শঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। অল্প বগিতে চড়ার কারণে তীব্র ভীড় আর তাপে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগও করেন অনেকে। তবে এব্যপারে চট্টগ্রাম রেলওয়ের পি ডাব্লিউ আওলাদ শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র বলেন, রাস্তার সংস্কার, খেলোয়াড় যাতায়াত ও ইঞ্জিনের সমস্যার কারণে শিডিউল মেনে ট্রেন ছাড়া সম্ভব হচ্ছেনা। আমরা সমস্যা দূরীকরণে কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়ে চিন্তা করে ষোলশহর স্টেশনে এনাউন্সমেন্ট করতে বলেছি যাতে শিক্ষার্থীরা বিকল্প পথে চলে আসতে পারে। এবিষয়ে ষোলশহর স্টেশনে দায়িত্বে থাকা সহকারী স্টেশন মাস্টার তান্নি বড়ূয়া বলেন, আপলাইনে পিডিবি দোহাজারী লাইনের একটি ট্রেন এক্সিডেন্ট হয়েছে। গত তিনদিন ধরে এখন ও ঠিক করা সম্ভব হয়নি। ঠিক করার কাজ চলছে। ভি আই পি (খেলোয়াড়) মুভমেন্টের কারণে জাকির হোসেন রোড় ব্লক থাকায় আজ শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। যতদিন খেলোয়াড় থাকবে ততদিন বিপর্যয় ঘটবে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১