আপডেট : ২৭ August ২০১৯
গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় একাধিক কিশোর গ্যাং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ সকল গ্যাংয়ের সদস্যরা ঘাট এলাকায় ছিনতাই, মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। গ্যাংয়ের সদস্যদের মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দলে গত সোমবার সন্ধ্যায় সুজায়েত হোসেন সুজাত (২২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। সুজায়েত হোসেন সুজাত গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সাহাদত মেম্বার পাড়ার আলী নুর হোসেনের ছেলে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঘাতক ইমন শেখকে (১৮) স্থানীয় জনতা রক্তাক্ত ছুরিসহ আটক করে পুলিশে দেয়। সে একই এলাকার হাসান শেখের ছেলে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যস্ততম দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। এসকল সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হয়। এ সকল মানুষকে টার্গেট করে প্রভাবশালীদের মদদে ফেরিতে ডাকাতি ও জুয়াড়–চক্রের প্রধান হোতা মাদার কাজীর ছেলে নুরু কাজীর নেতৃত্বে সুজাত ও ইমন ঘাট এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করত। এ গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা হলো, জামিল, রাজু, নাজমুল, সোহাগ, ঝন্টু, মিন্টু, আ. কাদের, তোফাই, রনি, আলী, ওসমান প্রমুখ। কিছুদিন আগে ইমন মাদক নিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পরে। ইমনের ধারণা তার আটক হওয়ার ব্যাপারে নুরু ও সুজাতের হাত ছিল। সম্প্রতি ইমন জামিন পেয়ে নুরু কাজীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে নিজেই একটি গ্রুপ তৈরী করে মাদক ব্যবসা শুরু করে। এদিকে নুরুর গ্রুপের কয়েকটি মাদকের চালান পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এতেই নুরু সন্দেহ করে যে ইমন পুলিশকে তথ্য দিয়ে তাদেরকে বেকায়দায় ফেলছে। কয়েকদিন আগে নুরু ও সুজাত ইমনকে হাতুরীপেটা করে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয়। এ ঘটনায় ইমন গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়রীও করে। এ পরিস্থিতিতে গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে দৌলতদিয়া বাইপাস সড়কে সুজাতকে একা পেয়ে ইমন উপুর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে এবং ইমনকে রক্তমাখা ছুরিসহ আটক করে। সুজাতকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে সুজাতকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। জানা যায়, দৌলতদিয়ায় গুরুত্বপুর্ণ নদী বন্দর ছাড়াও এখানে রয়েছে দেশের সর্ববৃহত যৌনপল্লী। এ যৌনপল্লীকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে শিশু-কিশোরদের কয়েকটি গ্রুপ নানাবিধ অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এরা বড় বড় অপরাধীদের দ্বারা ব্যাবহৃত হয়ে থাকে। ১২ থেকে ২৫ বছর বয়সী কিশোর-যুবকরা এসব গ্রুপে সক্রিয়। এ সকল গ্রুপের সদস্যরাই দৌলতদিয়া ঘাট ও দৌলতদিয়া যৌনপল্লী এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে থাকে। এ সকল গ্রুপের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও রহস্যজনক কারণে তৎপর দেখা যায় না। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সুজাতকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ইমন। এ বিষয়ে গ্রেফতারকৃত ইমন পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত সুজাতের মা রাবেয়া খাতুন বাদি হয়ে মঙ্গলবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করেছেন। মামলা তিনি ইমনকে একমাত্র আসামী করলেও এ হত্যা কাণ্ডের পিছনে অন্যদেরও হাত থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ গুরুত্বের সাথে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১