আপডেট : ০৭ August ২০১৯
শোকাহত ও অভিশপ্ত মাস আগস্টের আজ সপ্তম দিন। বেদনাবিধুর আগস্টে বাঙালি হারিয়েছে স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে। তাদের মধ্যে ছিলেন তার সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেছাও। পারিবারিক গণ্ডিতে যিনি পরিচিত ছিলেন ‘রেণু’ নামে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার সন্তান শেখ মুজিব দীর্ঘ আপসহীন লড়াই ও সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে শুধু বাঙালি জাতির পিতাই নন, বিশ্ববরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন, তার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তারই সহধর্মিণী ও মহিয়সী নারী ফজিলাতুন্নেছা। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব। আর এ অবদানের প্রতিদান জাতি দিয়েছে তাকে বঙ্গমাতা উপাধিতে ভূষিত করে। বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দিজীবন যাপন করছিলেন, তখন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী তার কাছে ছুটে আসতেন, তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পৌঁছে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা জোগাতেন। বিশেষ করে আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় যখন বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিলেন, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে ফজিলাতুন্নেছার দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তিসংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এই মহীয়সী নারী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সপরিবারে খুনিচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। জাতির পিতার আমৃত্যু সঙ্গী, বাংলার মহিয়সী নারী, বাংলাদেশের স্বাধীনতাসহ সব সোনালি অর্জনের নেপথ্য প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল বৃহস্পতিবার। অন্যদিকে শোকের মাস আগস্টে গভীর হয়েই বসেছে শোক। রাজধানীর প্রতিটি মোড়ে, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজের সামনে উড়ছে বিশাল বিশাল কালো পতাকা ও ব্যানার। প্রতিটি ব্যানার-ফেস্টুনেই বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখা বিভিন্ন স্লোগান। পলাতক খুনিদের দেশে ফেরত এনে ফাঁসির রায় কার্যকর এবং নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের দাবিতে অজস্র সংগঠনের পোস্টারে ছেয়ে গেছে সর্বত্র, প্রতিটি অলিগলির দেয়াল। এভাবেই আগস্টের প্রতিটি দিন শোকাবহ পরিবেশে কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি স্মরণ করছেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুকে। শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করা হচ্ছে প্রতিটি শোকের অনুষ্ঠানে। আগস্ট এলেই মোচড় দিয়ে ওঠে বাঙালির বুকের ভেতরটা। ৪৪ বছর পর আজও মুহুর্মুহু কাঁদাচ্ছে মানুষকে। যে বাঙালির জন্য এত ত্যাগ, এত তিতিক্ষা, বারবার ফিরে আসা মৃত্যুর দুয়ার থেকে সেই বাঙালি জাতির পিতাকে গুটিকয় লোভাতুর নরপিশাচ এমন নির্মমভাবে হত্যা করবে—এমন ভাবনা অবিশ্বাস্য ছিল বাঙালির কাছেও। আর তাই বারবার মনে করে মুখ, উজ্জ্বল চোখের দ্যুতি, আজও শ্রদ্ধায়, নৈবেদ্যে, প্রতিদিন-প্রতিক্ষণে ফিরে আসেন পিতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১