আপডেট : ২৯ July ২০১৯
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্মরতকালে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলায় জড়িত থাকার অভিযোগে কারা অধিদপ্তরের সিলেট রেঞ্জের উপমহাপদির্শক (ডিআইজি-প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালে একপর্যায়ে তাকে নিয়ে বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডির নর্থ রোডের ভূতের গলির বাসায় অভিযানে যায় দুদক। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে ঘুষের ৮০ লাখ টাকাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার ব্যবহার করা একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়। দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সিলেটের ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপালকে দুদক কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে দুদকের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র থেকে তথ্য পাওয়া যায়, ঢাকায় তার ধানমন্ডির নর্থ রোডের ভূতের গলির বাসায় বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা লুকানো আছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে দুদকের পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফের নেতৃত্বে একটি দল পার্থ গোপালের বাসায় অভিযান চালায়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পার্থ গোপালের বিরুদ্ধে দুদক আইনে মামলা করা হয়েছে। দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ জানান, তারা ধানমন্ডির নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ২৭-২৮/১ নম্বর বাসার বি/৬ নম্বর ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। এ সময় পার্থ গোপালের বাসা থেকে তার পাশের বাসার ছাদে টাকার ব্যাগ ফেলে দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকেই ওই ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করে পার্থ গোপালকে আটক করা হয়। ওই ফ্ল্যাটটির মালিক পার্থ। তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরাও সেখানে বসবাস করেন। তবে পার্থর দাবি, ফ্ল্যাটটি তার শাশুড়ি মঞ্জু সাহার। দুদক টিম পার্থর ব্যবহার করা একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করেছে। প্রাইভেটকারটি পার্থর বন্ধু শাহিনের বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। দুদক কর্মকর্তাদের ধারণা, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা এই অর্থ বাসায় রেখেছিলেন ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিক। গত বছরের ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসকে ময়মনসিংহগামী ট্রেন থেকে নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার এফডিআর, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করে রেলওয়ে পুলিশ। চট্টগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার হন তিনি। পরে সোহেল রানার বিষয়ে অনুসন্ধানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের দুর্নীতি নিয়ে নানা তথ্য পায় সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনিরুল আলম। কমিটি সে সময় চট্টগ্রামের তৎকালীন ডিআইজি (প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিকসহ ৪৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির তথ্য পায়। পরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তাদের সম্পদের হিসাব বিবরণীও চাওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে পার্থ গোপাল বণিকও সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন। সম্পদের হিসাব বিবরণীতে দুদকের সন্দেহ দেখা দিলে তাকে তলব করা হয়।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১