বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২২ June ২০১৯

বিইউপির বিরুদ্ধে অসত্য তথ্যে জমি অধিগ্রহণ চেষ্টার অভিযোগ


অসত্য তথ্য দিয়ে ব্যক্তি মালিকানার জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা করছে বাংলদেশ ইউনির্ভাসিটি অব প্রফেশনাল-বিইউপি। রাজধানীর অদূরে ইস্টার্ণ হাউজিং পল্লবী-২ প্রকল্পের এন-এম ব্লকে ২৪ একর জমি অধিগ্রহণ চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এখানে প্রায় সাড়ে তিনশ প্লট রয়েছে। যার মালিকা প্রায় দেড় হাজার ব্যক্তি। প্লটের মালিক হিসেবে সরকারি সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, বেসরকারি চাকুরিজীবিরা রয়েছেন। তাদের অভিযোগ, বিইউপি প্রভাব ঘাটিয়ে অন্যায় ভাবে জমি নেওয়ার চেষ্টা করছে।

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় প্লট মালিক অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে। ইস্টার্ণ হাউজিং পল্লবী-২ প্রকল্প এন এম ব্লক মালিক সমিতির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্লট মালিকদের একজন ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ অ্যান্ড আর্থ সাইন্সের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন। এ সময় আরেক প্লট মালিক ও শের-ই-বাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জয়নাল আবেদীনও কথা বলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিইউপির পাবলিক রিলেশন, ইনফরমেশন ও পাবলিকেশন শাখার পরিচালক এয়ার কমোডোর এম আমিনুল ইসলাম টেলিফোনে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, বিইউপি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো কয়েকগুণ বাড়বে। বর্তমানে দশ একর জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এতো কম জমিতে পরিচালিত হতে পারে না। তাই জমি দরকার।

সংবাদ সম্মেলনে কাজী সাউফুদ্দীন বলেন, বিইউপির জমি অধিগ্রহণের চেষ্টার বিষয়ে আমরা এরই মধ্যে বিষয়টি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিইউপির অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াকে বেআইনি উল্লেখ করে ভূমি মন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক চেয়ারম্যান ও বিইউপি উপাচার্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি করে ঢাকার জেলা প্রশাসককে তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের এখনও কিছু জানানো হয়নি। আমাদের জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে চিঠি দিলে প্রয়োজনে আমরা আদালতে যাব। এখনো আদালত যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, আমিও একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। এখানে আরো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা আছেন। এছাড়া সমাজের স্বনামধন্য মানুষ রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে উচ্ছেদ করে কেন বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রাসরণ করা হচ্ছে। তাছাড়া সেনানিবাসের ভিতরে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। তারা সেখানেই সম্প্রারণ কার্যক্রম শুরু করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্লট মালিকদের মধ্যে সরকারি, বেসরকারি, সামরিক কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত পেশাজীবি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, ডাক্তার ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকাটি যথাযথ নিয়ম কানুন অনুসরণ করে গড়ে ওঠেছে। প্রকল্পটির অনুমোদন রয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল প্তরের। জীবনের একটি স্থায়ী ঠিকানা তৈরি করতে সামর্থ্য মোতাবেক প্লট ক্রয় করেছেন তারা। ইতো মধ্যে রাজউকের অনুমোন নিয়ে অনেকে ৬/৭ তলা ভবনও নির্মাণ করেছে। অনেকের নির্মাণ কাজ চলমান। কেউ কেউ মাটি পরীক্ষার কাজ পরিচালনা করছেন। রাস্তা ঘাট, বিদ্যুৎ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইনও রয়েছে।

আরেক প্লট মালিক প্রকৌশলী এস আলম তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, বিইউপি আমাদের প্লট, বাড়ি, ইমারত কে পতিত জমি দেখিয়ে অধিগ্রহণের চেষ্টা পরিচালনা করছে। এরই মধ্যে রাজউক থেকে প্রভাব খাটিয়ে তারা সম্মতিও নিয়েছে। একই ভাবে সায় দিয়েছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। এই প্রক্রিয়ায় বিইউপি জানিয়েছে, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প করা হবে। কিন্তু এটি আদো সত্য নয়। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল মহল ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাই, তিনি যেন বিষয়টি খতিয়ে দেখে সঠিক পদক্ষেপ নেন। একই সঙ্গে আমরা বিইউপিকে আহ্বান করব, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে নাগরিকের মৌলিক অধিকার না কেড়ে নিতে। এতে তাদের সুনাম নষ্ট হবে।

অভিযোগকারীরা বলছেন, বিইউপি অধিগ্রহণে বলেছে, জাতীয় গুরুত্বপূণ প্রকল্প। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ আইনে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প সরকার কর্তৃক্ষ ঘোষিত হতে হবে। যেমন পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল প্রকল্প এগুলো। কিন্তু এখানে তা হয়নি। এছাড়া ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এর নীতিমালা মোতাবেক, আবাসিক এলাকা বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন ও বর্ধিত করার কোন সুযোগ নেই। কেবল প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় করার সুযোগ রয়েছে।

এসময় জানানো হয়, এর আগে বিইউপি আরো ৪ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে গোপনে। তখন ৪০/৪৫টি পরিবার নিজেদের মাথা গোজার জায়গা হারিয়েছেন। তবে গোপনীয়তার কারণে কোন প্রতিবাদও করতে পারেনি। তবে এবার সংশ্লিষ্ট প্লট মালিকরা বিষয়টি সূত্রের মাধ্যমে আগেই জানতে পেরে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন।

নিজের প্লট হারানোর আশঙ্কায় জারিন নামে এক এইচ এস সি শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠিতে বলেছেন, আমার বাবা একজন বেসরকারি চাকুরিজীবি। আমাদের কোনো ভাই নেই। বাবা আমার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একটি প্লট কিনেছেন। এখন শুনতেছি সেটি বিইউপি অধিগ্রহণ করছে। আমাদের দুই বোনের প্লটটি অধিগ্রহণ না করার জন্য আকুল আবেদন করছি।  


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১