বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৬ April ২০১৯

লবণাক্ত জমিতে সূর্যমুখী ও গম চাষে সাফল্য

খুলনার দাকোপ উপজেলায় পতিত জমিতে চাষ করা সূর্যমুখী ছবি : বাংলাদেশের খবর


দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের খুলনা জেলার একটি প্রত্যন্ত উপজেলা দাকোপ। তীব্র লবণাক্ততার কারণে এ এলাকায় বছরে শুধু আমন মৌসুমে ধান চাষ করা সম্ভব হয়। রোপা আমন ধান দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের একমাত্র ফসল। আমন ধান কাটার পর এ এলাকার বেশিরভাগ জমি পতিত থাকে। এই পতিত জমিতে গম ও সূর্যমুখী চাষে সফল হয়েছেন গবেষকরা।  এতে কৃষকরা বিঘাপ্রতি ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা।

দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে লবণাক্ত জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনতে গবেষণা করে যাচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন। এরই ধারাবাহিকতায় দাকোপের পানখালিতে রোপা আমন ধান কাটার পর রবি মৌসুমে সূর্যমুখী ও গম চাষে সফল হয়েছেন এই ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. এনামুল কবীর এবং উপ-গবেষক সহকারী অধ্যাপক বিধান চন্দ্র সরকার। দাকোপের পানখালিতে ১০ বিঘা (প্রায় ১.৫ হেক্টর) জমিতে দুটি গবেষণা প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে।

অস্ট্রেলিয়ার সরকারি সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচার রিসার্চ (এসিআইএআর) এবং বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) যৌথ অর্থায়নে খুবিসহ বাংলদেশ, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সমন্বিত গবেষণা প্রকল্পে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এ বিষয়ে উপ-গবেষক সহকারী অধ্যাপক বিধান চন্দ্র সরকার বলেন, প্রথম প্রকল্পে আমরা নির্বাচন করার চেষ্টা করেছি যে, এখানে রবি মৌসুমের কোনো ফসল চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত এবং এ পরিবেশে টিকে থাকবে কি না। আমরা অনেকগুলো ফসল নিয়ে কাজ করেছি যেমন গম, সরিষা, সূর্যমুখী, ভুট্টা, মটর ইত্যাদি। এদের মধ্যে সূর্যমুখী ও গম (তিন বছর) সফলভাবে চাষ করা সম্ভব হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনার উপপরিচালক পঙ্কজ কান্তি মজুমদার জানান, সূর্যমুখী এমন একটি ফসল যা এই লবণাক্ত অঞ্চলেও আবাদ করা যাচ্ছে। এ ফসলের মৌসুমের কোনো প্রভাব নেই, দেরিতে লাগালেও হচ্ছে। এর মূল মাটির গভীর থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না লাগালে ফুল ফুটবে না এমন কোনো বিষয় নেই। এ জন্য এটি রবি, খরিফ-১ এবং খরিফ-২ এই তিন মৌসুমেই করা যাবে। তবে রবি মৌসুমে এর ফলন বেশি। এতে কৃষক এবং সর্বোপরি সরকার লাভবান হবে।

মুখ্য গবেষক অ্যধাপক ড. মো. এনামুল কবীর জানান, সূর্যমুখী ও গম এ অঞ্চলে যায় তা গত কয়েক বছরের গবেষণায় আমরা নিশ্চিত হয়েছি। রবি মৌসুমে সূর্যমুখী ও গমচাষের নতুন প্রযুক্তি (সার, পানি, লবণাক্ততা ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা) কৃষকদের দিতে পারলে এই এলাকায় রোপা আমনের সঙ্গে তারা অতিরিক্ত একটি ফসল পাবে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হবে। সূর্যমুখী চাষে ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণেও ভূমিকা পালন করবে এবং কৃষকরা নিজেরাও সূর্যমুখীর তেল ব্যবহার করতে পারবে।

পানখালির কৃষক শংকর প্রসাদ বলেন, সূর্যমুখী ও গম চাষের ফলে আমরা রোপা ধানের সঙ্গেও অতিরিক্ত একটি ফসল পাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও পাব। সূর্যমুখী এবং গম চাষের ফলে আমরা লাভবান হব।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১