বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২২ March ২০১৯

ইসলামে নারীশিক্ষার অধিকার

নারীশিক্ষা ছবি : সংগৃহীত


মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের মধ্যে শিক্ষা অন্যতম। কেননা শিক্ষা হচ্ছে এমন এক হাতিয়ার যা মানুষকে সত্যিকার অর্থে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।

শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা শুধু পুরুষের জন্য সীমাবদ্ধ নয়, বরং শিক্ষা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার। ইসলাম নারীকে দিয়েছে জ্ঞান অর্জনের অনুপ্রেরণা! পৃথিবীর সব ধর্ম ও মতবাদের মধ্যে শুধু ইসলাম ধর্মেই নারীর জন্য জ্ঞান অর্জন করাকে বাধ্যতামূলক (ফরজ) করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর ফরজ (ইবনে মাজাহ)। পুরুষরা যেভাবে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে দ্বীনের ইলম শিক্ষালাভ করত, মহিলাদের জন্যও স্বতন্ত্রভাবে ইলমে দ্বীন শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল। ইসলামের সোনালি ইতিহাসের এক বিরাট স্থান জুড়ে রয়েছে নারীদের কৃতিত্ব। শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিবেক-বুদ্ধিতে তারা ছিলেন অনেক পুরুষ সাহাবির চেয়েও অগ্রগামী! সাহাবি, তাবেয়িদের যুগে মুসলিম নারীদের মধ্যে অনেক বড় বড় বিদুষী, ফকিহ ও হাদিসবেত্তার প্রমাণ পাওয়া যায়। নবীপত্নী হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা ছিলেন হাদিস ও ফিকাহ শাস্ত্রের অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারিণী। বড় বড় সাহাবি ও তাবেয়িরা তার কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। হজরত আবু মুসা আশ’আরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস। তিনি বলেন, আমরা রসুল (সা.)-এর সাহাবিরা যখনই কোনো ব্যাপারে সন্দেহ বা সমস্যায় পড়তাম, তখনই আমরা হজরত আয়েশার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতাম এবং সঠিক সমাধান পেয়ে যেতাম (তিরমিজি)। তা ছাড়া হজরত আসমা বিনতে আবু বকর, উম্মে সালমা, উম্মে দারদা, ফাতেমা বিনতে কায়েস, খাওলা, মায়মুনা বিনতে সা’দ, খানসা (রা.) প্রমুখ মহিলা সাহাবি তাদের স্বীয় মেধা ও ইলমি যোগ্যতার জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন।

ইসলামের দৃষ্টিতে নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কেননা বিশাল এই মানবকুলের অর্ধেকই নারী, বাকি অর্ধেকের তারাই জননী! তাই তাদের বাদ দিয়ে একটি জাতির অগ্রগতির আশা করা বোকামি! ইসলাম কখনোই নারীর শিক্ষার অধিকার খর্ব করেনি। বরং ইসলাম নারীদের জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের সব দ্বার করে দিয়েছে উন্মুক্ত। বর্তমানে মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, মেডিকেল, ভার্সিটি সব জায়গায় মেয়েদের বিশাল উপস্থিতি। মানবকুলের অর্ধেক প্রায় নারীগোষ্ঠীর শিক্ষার মৌলিক চাহিদা মেটাতে নারী শিক্ষকের প্রয়োজন আছে। মহিলাদের চিকিৎসা চাহিদা মেটাতে মহিলা ডাক্তার আবশ্যক বটে!

অবস্থা ও পরিবেশের তাগিদে নারী যদি ডাক্তার, নার্স, শিক্ষকতার পেশা অবলম্বন করে তাতে কোনো বাধা নেই। বরং ইসলামী নীতির আলোকে নারীর ডাক্তার নারী হবে, নারীর শিক্ষক নারী হবে- এটাই অধিকতর কল্যাণকর। কিন্তু এক্ষেত্রে আল্লাহতায়ালা কিছু সীমারেখা প্রণয়ন করে দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা এবং মুমিন নারীদের বলে দেন, তারা যেন ঘর থেকে বের হওয়ার সময় চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়। এতে তাদের চেনা অধিকতর সহজ হবে। ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু (সুরা আহযাব, আয়াত : ৫৯)।

আল্লাহতায়ালার ফরজ পর্দার বিধান মেনে মেয়েরা যে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। শিক্ষা যেমন নারীর জন্য জরুরি, পর্দাও নারীর অস্তিত্ব ও সম্ভ্রম রক্ষার জন্য জরুরি। তাই একটা অর্জন করতে গিয়ে আরেকটার যেন হানি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সর্বোপরি নারীদের জন্য হবে নারীবান্ধব শিক্ষাঙ্গন।

 

লেখিকা : শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১