আপডেট : ০৪ March ২০১৯
আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার চলমান উদ্যোগে গতি আনতে নতুন প্রকল্প নিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে সরকারি পাঁচ প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে কৌশলপত্র। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের জন্য ৩৫ কোটি ৬৫ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ের কৌশলপত্রে বাড়তি ১৭ কোটি ডলার ব্যয় করবে সরকার। এতে ১০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৪০ কোটি টাকা। এ বিষয়ে একটি ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক পর্ষদ। গতকাল রোববার বিশ্বব্যাংকের সদর দফতর ওয়াশিংটন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, সেবা সরবরাহ সক্রিয় করতে সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ শীর্ষক প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের এ অর্থ ব্যয় করা হবে। প্রস্তাব অনুমোদনের পর বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর দাদান চ্যান বলেন, বাংলাদেশে গত দুই দশকে সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়েছে। এ সময়ে আর্থিক ব্যবস্থা অনেকটা কার্যকর হয়েছে। সরকারের ঋণের পরিমাণও সীমার মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সরকারের সম্পদপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াবে। বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে রাজস্ব খাতে উন্নতি হলেও বাজেট প্রণয়ন, অর্থায়ন ও বাস্তবায়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। রাজস্ব আহরণের পরিমাণ এখনো মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশের কম। ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে সরকারের ৮০ শতাংশ প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ছে। এ অবস্থায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা কমিশন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) কার্যালয় ও সরকারি ক্রয় কারিগরি ইউনিটের (সিপিটিইউ) আধুনিকায়নে কাজ করতে প্রকল্পটি নেওয়া হচ্ছে। ঋণের বিষয়ে একটি ধারণাপত্রে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত দুই দশকে বাংলাদেশে সুশাসনের উন্নতিতে বড় ভূমিকা রেখেছে সরকারি অর্থায়ন ব্যবস্থাপনা। এর পরও এ খাতে বড় ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ সময়ে ৩ দশমিক ১ শতাংশ থেকে বেড়ে বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সরকারি ঋণের পরিমাণ জিডিপির ৩১ শতাংশে নেমে এসেছে। সরকারের উন্নয়ন ব্যয় বাজেটের ৪১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তবে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ জিডিপির ৯ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকার বিষয়টি বড় ধরনের উদ্বেগের কারণে পরিণত হয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের হারও কমে আসছে। সরকারের বিনিয়োগের মানও কমে আসছে। সরকারের অন্তত ৮০ শতাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে বিলম্বে। ফলে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে। বিনিয়োগ থেকে লাভ আসছে প্রত্যাশার চেয়ে কম। বাড়ছে ঋণ পরিশোধের ব্যয়। তা ছাড়া বাজেটে খাতভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের হার নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় অবকাঠামো দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। কৃষি খাতে ভর্তুকির নকশা ও লক্ষ্যমাত্রায় গলদ রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে সরকারি বরাদ্দের পরিমাণ অনেক কম। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংক জানায়, কম সুদে ঋণদানে সহায়ক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে এ ঋণ দেওয়া হবে। পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ মোট ৩০ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে পারবে সরকার। এ ঋণে সুদের হার ধরা হয়েছে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। এর বাইরে রেয়াতকাল পরবর্তী সময়ে উত্তোলিত অর্থের শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করতে হবে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১