আপডেট : ১৯ February ২০১৯
রসুলুল্লাহ (সা.)-এর অন্তরে শিশুদের প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল। তিনি এ বিশ্ব চরাচরে রাহমাতুল্লিল আলামিন হিসেবে তাশরিফ এনেছেন। আল্লাহর প্রতিপালন যেমন সর্বজনীন, মহানবী (সা.)-এর প্রেম-ভালোবাসাও তেমনি সর্বজনীন। হাদিসে বর্ণিত আছে, একবার মহানবী (সা.)-এর কানে হজরত হুসাইন (রা.)-এর কান্নার শব্দ এলো। এতে তিনি ভীষণভাবে ব্যথিত হলেন। তিনি হজরত ফাতিমা (রা.)-কে বললেন, তুমি কি জানো না তার কান্না আমাকে কষ্ট দেয়? হজরত আনাস (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) শিশু-কিশোরদের কাছ দিয়ে যাতায়াতকালে তাদের সালাম করতেন। একবার রসুলুল্লাহ (সা.) ভাষণদানের নিমিত্তে মিম্বরে আরোহণ করে দেখতে পেলেন, হাসান ও হুসাইন (রা.) দৌড়াদৌড়ি করছেন এবং পা পিছলে পড়ে যাচ্ছেন। তিনি ভাষণদান বন্ধ করে মিম্বর থেকে নেমে এলেন। শিশু দুটির দিকে অগ্রসর হয়ে দুই বাহুতে উঠিয়ে নিলেন। তারপর মিম্বরে আরোহণ করে বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের ধন-সম্পদ এক পরীক্ষার বস্তু, আল্লাহর এ বাণী সত্যিই। একদিন রসুলুল্লাহ (সা.) নামাজ আদায় করছিলেন। আর তখন হজরত হাসান ও হুসাইন (রা.) এসে তাকে সিজদারত অবস্থায় পেয়ে একেবারে পিঠে চড়ে বসলেন। তিনি সিজদা দীর্ঘায়িত করলেন। আর তারা পিঠ থেকে না নামা পর্যন্ত তাদেরও নামিয়ে দিলেন না। রসুলুল্লাহ (সা.) সালাম ফিরালে সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসুল! আমরা লক্ষ করলাম, আপনি সিজদা দীর্ঘায়িত করেছেন। তিনি উত্তরে বললেন, আমার নাতিদ্বয় আমাকে সওয়ারি বানিয়েছে। কাজেই তাদের তাড়াতাড়ি নামিয়ে দেওয়াটা আমার পছন্দ হয়নি। রসুলে কারিম (সা.) কখনো কখনো শিশুদের কান্না শুনতে পেলে নামাজ সংক্ষেপ করে দিতেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদের যত্ন নেবে এবং তাদের আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেবে। মহানবী (সা.) আরো বলেছেন, তোমরা শিশুদের ভালোবাস এবং তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন কর। তাদের সঙ্গে কোনো ওয়াদা করলে তা পূর্ণ কর। কেননা তারা তোমাদের তাদের রিজিক সরবরাহকারী বলে জানে। মহানবী (সা.)-এর অকৃত্রিম ভালোবাসা, স্নেহ, মমতা, সবার জন্য নিবেদিত। শিশু যেহেতু দুনিয়ায় পুষ্পবিশেষ, তাই তাদেরও খুব ভালোবাসতেন, আদর করতেন, স্নেহ করতেন। কাজেই আমাদেরও শিশুদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা রাখা উচিত। হজরত ইবন উমর (রা.) বলেন, রসুলে কারিম (সা.)-এর নেতৃত্বাধীন কোনো যুদ্ধে এক মহিলাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল। এতে রসুলে কারিম (সা.) গভীরভাবে মর্মাহত হন এবং নারী ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করেন। তিনি এতটাই শিশুদের ভালোবাসতেন অথচ আমাদের সমাজের শিশুরা কতই না অবহেলিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত। আমরা কি পারি না এই বঞ্চিত শিশুদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সমাজকে কলঙ্কমুক্ত করতে! লেখক : ইমাম, বাইতুন নূর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, দক্ষিণ পীরেরবাগ, ঢাকা
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১