বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৮ February ২০১৯

দুই সিজিএস স্টেশনে যান্ত্রিক ত্রুটি

দ্বিতীয় দিনেও গ্যাস সঙ্কট


এক দিন পার হলেও তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির দুই কেন্দ্রীয় গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থাপনা (সিজিএস) স্টেশনের যান্ত্রিক ত্রুটির সমাধান হয়নি। ফলে দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল রোববারও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিল তীব্র গ্যাস সঙ্কট। কিছু এলাকায় সামান্য গ্যাস সরবরাহ থাকলেও তা দৈনন্দিন কাজের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সঞ্চালন লাইনের এই ত্রুটি সমাধানে আরো এক দিন লেগে যেতে পারে সংস্থাটির।

এদিকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় সপ্তাহের প্রথম দিনই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে কর্মজীবী মানুষকে। সকালের নাশতা না খেয়েই ঘর থেকে বের হয়েছে অনেককে। আবার হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্টে গিয়ে পাওয়া যায়নি খাবার। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার আদাবর, মনসুবরাবাদ, শেখরটেক এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই সব রেস্টুরেন্টের খাবার শেষ হয়ে যায়। আর দুপুরের চিত্র ছিল আরো ভয়াবহ। আদাবর ৮ নম্বর সড়কের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ট্রেডের পরিচালক প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান টিটু বাংলাদেশের খবরকে বলেন, প্রতিদিনের মতো আজ (রোববার) অফিস সহকারীর মাধ্যমে লাঞ্চ পারসেল (দুপুরের খাবার) আনতে পাঠানো হয়। কিন্তু প্রায় দুই ঘণ্টা পর সে কোনো খাবার না পেয়ে ফিরে আসে। পরে আমরা অফিসের সব কলিগ মিলে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়ার পরিকল্পনা করি। কিন্তু সব রেস্টুরেন্টেই শুধু পারসেল বিক্রি হয়েছে, বসে খাওয়ার ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে। উপায় না পেয়ে মুড়ি ছোলা দিয়েই দুপুরের খাবার শেষ করতে হয়েছে।

নবোদয় হাউজিং এলাকার বাসিন্দা শেখ ইব্রাহিম সোহাগ জানান, শনিবার শেষ রাতে সামান্য গ্যাস পাওয়া গেলে তা পানি গরম হওয়ার জন্যও যথেষ্ট ছিল না। তিনি বলেন, সমস্যা কবে সমাধান হবে তাও জানি না। আর ভবিষ্যতে এমন সমস্যায় যেন পড়তে না হয় সেজন্য রাইস কুকার আর ইলেকট্রিক চুলা কিনে নিয়েছি।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির দেওয়া তথ্যানুযায়ী জানা যায়, গত শনিবার সকাল ৮টায় সংস্থাটির আশুলিয়া ও আমিনবাজারের সিজিএস স্টেশন দুটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এতে স্টেশন দুটির আওতাধীন এলাকায় তৎক্ষণাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

তবে হঠাৎ এমন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখার বিষয়ে গ্রাহককে কোনো আগাম নোটিশও দিতে পারেনি তিতাস। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ সিজিএস স্টেশন দুটি বন্ধ থাকায়, রাজধানীর আশুলিয়া, সাভার, আমিনবাজার, গাবতলী, মিরপুর, পাইকপাড়া, পীরেরবাগ, কল্যাণপুর, শ্যামলী, রিং‌রোড, মনসুরাবাদ, কাদিরাবাদ, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, আজিমপুর, হাজারীবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। পাশাপাশি কারণ সম্পর্কে অবগত না থাকায় অনেকের মধ্যে শঙ্কাও দেখা দেয়। তবে সংস্থাটি থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা করতে পারেনি গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি। এতে করে এসব এলাকার মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করা হবে এমন আশ্বাস দেওয়া হয়নি। তবে দ্রুতই সমস্যার সমাধান করা হবে বলে জানায় তারা।

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাসের অপারেশন বিভাগের পরিচালক কামরুজ্জামান খান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, শনিবারের সমস্যাটি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই ঘটেছে। আমরা আগেও বলেছি এই ত্রুটি তিতাসের নয়, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল)। তারপরও আমরা গ্রাহকের ভোগান্তি দূর করতে কাজ করছি। হঠাৎ এমন ত্রুটির কারণে আমরা তৎক্ষণাৎ গ্রাহককে কোনো নোটিশ দিতে পারিনি। পরবর্তীতে আমরা ঘোষণা করেছি ‘পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ ২৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে।’ নোটিশে বলা হয়নি যে, ২৪ ঘণ্টা পর সমাধান হবে। তবে আশা করছি আজ রাতের (রোববার) মধ্যে সমাধান করা সম্ভব হবে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১