বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৫ February ২০১৯

জন্মগতভাবে মানুষ স্বাধীন


ইসলাম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দেয় এবং বৈধ উপায়ে উপার্জিত সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করে। বৈধ উপার্জনের অধিকার, তার মালিকানা রক্ষা, হস্তান্তর, দান এবং তা ভোগ করার অধিকার ইসলাম দিয়েছে। অন্যায়ভাবে তা গ্রহণ করাকে ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না’ (সুরা বাকারা : ১২৮)।

অন্যদিকে প্রত্যেক নাগরিকের ইজ্জত-আব্রু রক্ষার গ্যারান্টি দেওয়া ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। মানুষের মর্যাদাহানি, হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য নিন্দা, কুৎসা রটানো, বিদ্রূপ ও উপহাস করা, নাম ও উপাধি বিকৃত করাকে নিষিদ্ধ করে পবিত্র কোরআনে আরো ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তোমাদের কোনো সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে যেন বিদ্রূপ না করে’ (সুরা হুজুরাত : ১১)। এ প্রসঙ্গে রসুল (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেন, ‘তোমাদের রক্ত (জীবন), তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের ইজ্জত-সম্মান তোমাদের কাছে পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর ও তোমাদের এই মাস’ (সহিহ বুখারি, দ্বিতীয় খণ্ড পৃ. ৬৩২)।

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মানুষই জন্মগতভাবে স্বাধীন। এই স্বাধীনতা আল্লাহ কর্তৃক প্রদেয় নিশ্চয়তা। যে কোনো ধরনের জোরজবরদস্তি ইসলামী রাষ্ট্রে সম্ভব নয়। ইসলামী নীতি অনুযায়ী কোনো উপযুক্ত আদালতে আইনানুযায়ী দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে কারাদণ্ড দেওয়া যাবে না। আইনের সুস্পষ্ট বিধান ছাড়া কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, আটক বা বলপ্রয়োগ করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সমান সুযোগ থাকবে। বিচার কার্যক্রমে এ ন্যায়নীতি অনুসরণের ব্যাপারে কোরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে— ‘তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচারকার্য করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে তা করবে’ (সুরা নিসা : ৫৮)। এ প্রসঙ্গে ইমাম মালেক (রহ.) বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার বা দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ থাকবে।’

মূলত রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত মদিনা রিপাবলিকে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ঘোষিত সর্বজনীন, শাশ্বত ও চিরন্তন মানবাধিকারের নীতিসমূহ সর্বকালের ও সর্বযুগের বিপন্ন মানবতার মুক্তির প্রকৃত দিকনির্দেশক। ইসলাম শুধু মৌলিক মানবাধিকার সনদের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বরং ইসলামের সোনালি ইতিহাসে তার সফল বাস্তবায়নও করেছে।

 

লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১