আপডেট : ০৫ February ২০১৯
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে ওঠা সরকারি-বেসরকারি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। হাইকোর্টের নির্দেশনার দুই বছর পর গতকাল সোমবার সকাল সোয়া ১০টায় সদরঘাট লাইটারেজ জেটিঘাট এলাকায় এই অভিযান শুরু হয়। পতেঙ্গা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার তাহমিলুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন। উচ্ছেদ অভিযানের শুরুতেই জেটিঘাটে নদীসংলগ্ন স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে শুরু করে মোহরা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা তিনটি জোনে ভাগ করে এ অভিযান চলবে। ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর বলেন, প্রথম ভাগে সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। পরে পতেঙ্গা ও চাক্তাই এলাকায় উচ্ছেদ শুরু হবে। পে লোডার, এক্সক্যাভেটর ও ট্রাক নিয়ে ১০০ শ্রমিক নদী তীরের অবৈধ স্থাপনাগুলো ভাঙার কাজ করছেন। অভিযানে সিটি করপোরেশন, সিডিএ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস ও কর্ণফুলী গ্যাসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত আছেন। এ ছাড়া পুলিশ ও র্যাবের ২৫০ সদস্যও এতে অংশ নিয়েছেন। প্রথম দফার অভিযানে দুইশ’র মতো স্থাপনা উচ্ছেদ হলে ১০ একরের মতো জায়গা উদ্ধার হবে বলে জানান সহকারী কমিশনার তাহমিলুর। তিনি বলেন, উচ্ছেদ কাজে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা সহযোগিতা করছে। অভিযান শুরুর আগেই অনেকে তাদের স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোনো দিক থেকে কোনো বাধা আসেনি। ২০১০ সালে কর্ণফুলী নদীর গতিপথ স্বাভাবিক রাখতে নদীর সীমানা নির্ধারণ, দখল, ভরাট ও নদীতে যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই কর্ণফুলী নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও ভূমি জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ লক্ষ্যে গঠিত ১৬ সদস্যের কমিটি ২০১৬ সালের ১৮ জুন আরএস ও বিএস রেকর্ড অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর বর্তমান অবস্থান ও দখলদারদের চিহ্নিত করে একটি তালিকা তৈরি করে। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদীর দুই তীর দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা সরাতে ৯০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে আদেশ প্রদান করেন। জানা গেছে, অর্থ সঙ্কটসহ নানা জটিলতায় এতদিন উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর এ উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন। শুধু জেলা প্রশাসন নয়, অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার পাশাপাশি দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। মন্ত্রী হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আমার কাছে অনেক কল এসেছে। রিকোয়েস্টও এসেছে। আমি মনে করি, এখানে রিকোয়েস্ট রাখার কোনো সুযোগ নেই। দীর্ঘ সময় আমরা দিয়েছি। আর কিছু করার নেই। আমরা সবকিছু বিবেচনা করেই কাজ করছি।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১