বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৩ February ২০১৯

মোদির সামনে ৩ নারীর চ্যালেঞ্জ


আর মাত্র কয়েক মাস পরেই ভারতে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ছাড়াও সব কয়টি দল এখন থেকেই হিসাব-নিকাশ শুরু করেছে। ক্ষমতাসীন দলকে পরাজিত করতে বিরোধী দলগুলো একাট্টা হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারেন তিন নারী।

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ভোটের লড়াইয়ে চমক হিসেবে মাঠে নামিয়েছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতার পর নেহেরু-গান্ধী পরিবার বেশিরভাগ সময় ভারত শাসন করলেও দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির বাইরেই ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর নাতনি প্রিয়াঙ্কা। সম্প্রতি কংগ্রেস জানায় তিনি রাজনীতিতে আসছেন। জানুয়ারিতে ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে এক নির্বাচনী সমাবেশে কংগ্রেসের হয়ে মঞ্চে ওঠেন প্রিয়াঙ্কা। তারা রাজনীতিতে আসার বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে,  রাজীব গান্ধীর মেয়ে মোদির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবেন। বাকি দুই নারী হলেন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সকে (এনডিএ) ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে ভিন্ন ভিন্ন দলের এই তিন নারী এক হয়েছেন। যদিও দলগুলোর মধ্যে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি হয়নি। এ বিষয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা বলেন, এনডিএর তুলনায় বিরোধী দলে অধিক প্রভাবশালী নারী নেতৃত্ব রয়েছে। তারা ভোটারদের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে সক্ষম। বিশেষ করে নারী ভোটাররা তাদের প্রতি বেশ আস্থাশীল। গত বছর বিজেপি থেকে বেরিয়ে যান যশবন্ত। ওই বছরই ভারতের বিধানসভা নির্বাচনে দেশটির বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ তিনটি রাজ্যে পরাজিত হয় বিজেপি। যশবন্তের মতে, রাজনীতির অন্যতম প্রাণকেন্দ্রে হিসেবে পরিচিত তিনটি রাজ্যে হেরে যাওয়ার পর বিজেপির উদ্বিগ্ন হওয়ারই কথা। মূলধারার রাজনীতিতে প্রিয়াঙ্কার অভিষেক দেশটির গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করেছে। কেউ কেউ তার মধ্যে ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া দেখতে পান। কারো কারো মতে, তিনি মে মাসের নির্বাচনে কংগ্রেসের ট্রাম্প কার্ড। যদিও এ নিয়ে সমালোচনা করার লোকেরও অভাব নেই।  বিজেপি নেতাদের এমন ব্যঙ্গোক্তি করতেও শোনা গেছে, প্রিয়াঙ্কা যদি ট্রাম্প কার্ড হয় তাহলে কংগ্রেস কেন এতদিন ‘জোকার’ নিয়ে খেলেছে।  তবে প্রিয়াঙ্কার তুলনায় রাজনীতিতে অন্য দুই নারীর অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। যদি বিরোধী জোট ভোটে জেতে, তাদের মধ্য থেকে যে কেউ সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হবেন- এমনটাইও  শোনা যাচ্ছে। ৬৩ বছরের মায়াবতীর দল বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) মূলত ভারতের নিম্নবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের ‘দলিত’ প্রতিনিধিত্ব করে। গত মাসে মায়াবতী তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্ব্বী সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট গঠন করেন। অন্যদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে দুইবার রেলপথ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মমতা ১৯৯৭ সালে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে  নিজ দল অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস (এআইটিসি) গঠন করেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা গত মাসে রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় বিজেপিবিরোধী র্যালির আয়োজন করেন। ওই  র্যালিতে সারা ভারত থেকে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। তবে বিরোধী দলগুলো যত চেষ্টাই করুক, এখনো জনমত জরিপে মোদি ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। কন্যাশিশুদের উন্নয়নে তাদের শিক্ষিত করে তুলতে তার ‘বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও’ আন্দোলন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তার ২৬ সদস্যের মন্ত্রিসভায় আছেন ছয় জন নারী। তা ছাড়া ভোটারদের খুশি করতে গত শুক্রবার অন্তর্বর্তী নয় বরং পূর্ণ বাজেট পেশ করে চমক দেখিয়েছেন তিনি। বাজেটে প্রচুর সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দেশবাসীকে খুশির জোয়ারে ভাসিয়ে তাদের মন কাড়ার চেষ্টা করছেন তিনি।  যদিও মোদিকে ভোটের লড়াইয়ে পরাজিত করতে বিরোধী দলগুলো আটঘাট বেঁধেই মাঠে নেমেছে। নিজেদের মধ্যে বিরোধ ভুলে একজোট হয়ে কাজ করছে তারা। এ বিষয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা মোদির আমলে নানা অর্জনের ওপর ভিত্তি করে ভোটের প্রচার চালাবেন। বিরোধী জোটের কাছে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর মতো ইতিবাচক বিকল্প নেই।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১