ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম এবং কিশোরগঞ্জ-১ সংসদীয় আসনের পুনর্নির্বাচনে দলটির মনোনীত প্রার্থী প্রয়াত রাজনীতিবিদ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। গতকাল শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে গতকাল রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হয় দলের যৌথসভা। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা। এতে দলের সংশ্লিষ্ট নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসির মেয়র পদে ভোটগ্রহণের দিন ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে শূন্য হয়ে যাওয়া কিশোরগঞ্জ-১ আসনের পুনর্নির্বাচনও একই দিন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় ইসি। গত ২২ জানুয়ারি বিকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে অনুষ্ঠিত ৪৩তম কমিশন সভায় ইসি ওই দুই নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। 

গত ১৬ জানুয়ারি ডিএনসিসির মেয়র পদে উপনির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ ও রুল খারিজ করে দেন উচ্চ আদালত। এর ফলে ডিএনসিসির মেয়র পদে উপনির্বাচন হতে আর কোনো বাধা নেই। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল। এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনিসুল হক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনিসুল হক মারা যান। পরে ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি ইসি ডিএনসিসির উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সীমানা জটিলতা নিয়ে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৭ জানুয়ারি এই নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে এই নির্বাচনী তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। পরে রিটকারীর আইনজীবীরা অনুপস্থিত থাকায় গত ১৬ জানুয়ারি ওই রিট খারিজ করে দেন আদালত। এতে করে ডিএনসিসি উপনির্বাচনের আইনি জটিলতার নিরসন হয়।

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সৈয়দ আশরাফ মারা যাওয়ায় করায় শপথ গ্রহণ করতে পারেননি। যেহেতু তিনি শপথ গ্রহণ করেননি, তাই এই নির্বাচনকে সাধারণ নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয় পেলেও শপথ না নিতে পারায় সংসদ সদস্য হিসেবে গণ্য হননি তিনি। সৈয়দ আশরাফ গত ৩ জানুয়ারি ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সেদিনই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।