আপডেট : ২৪ January ২০১৯
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ বাহাদুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি দীর্ঘ ১০ বছর কলকাতার কংগ্রেস-হিন্দুপন্থিদের বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্রের পর ১৯২১ সালে কলা, বিজ্ঞান ও আইন- এই তিনটি অনুষদ নিয়ে চালু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়নের জন্য নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ৬০০ একর জমি দান করে গেছেন। এ মহান মানুষটির সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে জাতিকে উপহার দিলে শত শত সলিমুল্লাহ এদেশে সৃষ্টি হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ১৮৭১ সালের ৭ জুন ঢাকার নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার নবাব পরিবারে ব্রিটিশদের আরোপিত প্রথানুযায়ী জ্যেষ্ঠপুত্রই পিতার পর নবাব হবেন, সেজন্য খাজা সলিমুল্লাহই পরবর্তী নবাব হবেন বলে নির্ধারিত হয়ে যায়। ১৮৯৩ সালের আগস্ট মাসে পিতার অবাধ্য হয়ে সলিমুল্লাহ তার আত্মীয়া আসমাতুন্নেছাকে বিয়ে করেন। পিতার অমতে বিয়ে করার ফলে আহসান মঞ্জিলে নববধূকে নিয়ে বসবাস করা সম্ভব ছিল না। নবাব পরিবার থেকে প্রয়োজনীয় অর্থকড়ি নিয়ে ঢাকায় আলাদাভাবে বসবাস করাও সম্ভব ছিল না। সে সময় খাজা সলিমুল্লাহর নিয়ন্ত্রণে ছিল কেবল ঢাকায় ‘শাহীন মেডিকেল হল’ নামে একটি ওষুধের দোকান। এ দোকান থেকে অল্প কিছু অর্থ আসত। নবাব সলিমুল্লাহ অর্থকষ্টে নিপতিত হয়ে সরকারি চাকরির চেষ্টা চালাতে লাগলেন। কিন্তু তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকায় সরকারি চাকরি পেতে জটিলতার মধ্যে পড়তে হলো। অবশেষে ঢাকার কমিশনার মি. লটমন জনসন নবাব সলিমুল্লাহর বংশগৌরব, তীক্ষ মেধা-বুদ্ধি ইত্যাদি দেখিয়ে বঙ্গের গভর্নরের কাছ থেকে ১৮৯৩ সালে বিশেষ বিবেচনায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি জোগাড় করে দেন। তাদের প্রস্তাবে খাজা সলিমুল্লাহও রাজি হয়ে গেলেন। ২০০ টাকা বেতনে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে ময়মনসিংহে কাজে যোগদান করেন। তিনি থাকতেন ময়মনসিংহের রাজা সূর্যকান্তের বাড়িতে। তিনি ছাত্রদের নানান সহযোগিতা করতেন। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সাধারণ লোকের সঙ্গে এতটা মেলামেশায় ইংরেজ কর্মকর্তারা সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতেন। ফলে তাকে ঘনঘন বদলি করতে লাগলেন। প্রথমে বিহারে, তারপর ত্রিপুরায় বদলি করল। বারবার বদলির ফলে তিনি বিরক্ত হয়ে দু’বছর পার না হতেই ১৮৯৫ সালে সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর নবাব স্যার সলিমুল্লাহর সহযোগিতায় ব্রিটিশ সরকারের পরিকল্পিত বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হওয়ার পর পূর্ববঙ্গ ও আসাম নিয়ে গঠিত হয় পূর্ববঙ্গ প্রদেশ। ঢাকায় ছিল এর রাজধানী। এ রাজ্যের লোকসংখ্যা ছিল ৩ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে এক কোটি ৮০ লাখ ছিল মুসলমান এবং এক কোটি ২০ লাখ ছিল হিন্দু। বাকিরা অন্যান্য ধর্মের। স্যার র্যামফিল্ড ফুলার হন নতুন প্রদেশের লে. গভর্নর। ঢাকায় নতুন প্রদেশের রাজধানী হওয়ার পর নবাব স্যার সলিমুল্লাহ কার্যত বেসরকারি উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। বঙ্গবিভাগের মুসলিম নেতাদের তিনি ছিলেন মধ্যমণি। ১৯০৫ সালের শেষদিকে ভারত সরকারের সচিবের সঙ্গে ভাইসরয় লর্ড কার্জনের মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি পদত্যাগ করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি মুসলমানদের প্রতি সহানুভূতিশীল। পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক সরকারি কার্যালয় ও বাসস্থান নির্মাণের জন্য নবাব সলিমুল্লাহ ঢাকার দিলকুশা বাগানবাড়ির দক্ষিণাংশ সরকারের কাছে লিজ প্রদান করেন। লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে বাসস্থান ও দাফতরিক কার্যালয় নির্মাণ করলে মি. ফুলার ১৯০৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে কার্যক্রম শুরু করেন। নবাব স্যার সলিমুল্লাহর পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকা মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকরা মিলিত হয়ে মুসলিম ইনস্টিটিউট নামে একটি সমিতি গঠন করেন। এতে নবাব সলিমুল্লাহ বাহাদুর বার্ষিক ৪০০ টাকা প্রদানে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক বছরের টাকা পরিশোধ করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ছিলেন আলীগড়ের স্যার সৈয়দ আহমদ খাঁর অনুবর্তী। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন পিছিয়ে পড়া জাতিকে এগিয়ে নিতে গেলে শিক্ষার বিকল্প নেই। ১৯০৬ সালের ২৮, ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর নবাব স্যার সলিমুল্লাহর উদ্যোগে ঢাকার শাহবাগে নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সমিতির বিশতম সম্মেলন বিচারপতি শরফুদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় দেড় হাজার ডেলিগেট। এদেশে নারীশিক্ষা উন্নয়নের জন্য নবাব সলিমুল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভাগের পর নবাব সলিমুল্লাহ ও রায় দুলালচন্দ্র দেব মিলে শিক্ষা পরিচালককে আশ্বাস দেন যে, তারা নারীশিক্ষা উন্নয়নে যথাসম্ভব সহায়তা দেবেন। এমন পরিস্থিতিতে পূর্ববঙ্গ ও আসাম সরকার জনশিক্ষা বিভাগের পরিচালক মি. আর. নাথানকে সভাপতি করে এদেশের সর্বস্তরে নারীশিক্ষার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। নবাব সলিমুল্লাহ ছিলেন কমিটির অন্যতম সদস্য। ১৯০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নারীশিক্ষা কমিটি গঠিত হওয়ার পর ঢাকায় ২৬, ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সলিমুল্লাহ উপস্থিত থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি প্রণয়ন করেন। তারপর নারীশিক্ষা উন্নয়নের জন্য নবাব সলিমুল্লাহর সভাপতিত্বে একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সভাপতি হন নবাব সলিমুল্লাহ বাহাদুর। ১৯০২ সালে নবাব সলিমুল্লাহর পিতার নামে আহসানুল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৪৭ সালে এটিকে উন্নীত করে নবাব আহসানুল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করা হয়। তারপর ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকার নবাব আহসানুল্লাহ নামটি বাদ দিয়ে নামকরণ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। ১৯০৯ সালে দেশের সুবিধাবঞ্চিত মুসলিম ছেলেমেয়েদের জন্য নবাব সলিমুল্লাহ নিজ খরচে ঢাকার কুমারটুলিতে ইসলামিয়া এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। পরে এটি ঢাকার আজিমপুরে স্থানান্তর করা হয়, যেটি সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা নামে সুপরিচিত। নবাব সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতালের ব্যাপক উন্নয়নের প্রস্তাব, বিত্তশালীদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে নিজে ৫ হাজার টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন। তার সভাপতিত্বে ঢাকার আহসান মঞ্জিলে ১৫ ও ১৭ মার্চ দুদিনব্যাপী পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক মুসলিম লীগের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নবাব সলিমুল্লাহকে সভাপতি করে এবং সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীকে সম্পাদক করে এবং ১০ জনকে সহ-সভাপতি করে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ পুনর্গঠন করা হয়। ভারতবর্ষের মুসলমানদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯১১ সালের ১৬ জুলাই নবাব সলিমুল্লাহর সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল অর্থ সংগ্রহ। ইতোপূর্বে গঠিত কমিটি ৫০ হাজার ৩৪৮ টাকা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে নবাব সলিমুল্লাহ দেওয়া চাঁদা ছিল ৫ হাজার টাকা। পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের লে. গভর্নর স্যার ল্যান্সলট হেয়ারকে বিদায় এবং নবাগত স্যার স্টুয়ার্ট বেইলিকে স্বাগত জানানোর জন্য ১৯১১ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকার কার্জন হলে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রদেশের রাজা, মহারাজা ও জ্ঞানী-গুণীসহ ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। এ সভায় পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক মুসলমান শিক্ষা সমিতিসহ প্রাদেশিক মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে বিদায়ী ছোট লাটকে যে অভিনন্দনপত্র দেওয়া হয়, তাতে ঢাকায় একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ও হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়। মুসলিম শিক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে অভিনন্দন পত্রটি পাঠ করেন নবাব সলিমুল্লাহ। ছোট লাট মি. হেয়ার সেদিন তাদের দাবি ন্যায্য ও অত্যাবশক বলে মতপ্রকাশ করেন। তারপর ১৯১১ সালের ২৮ অক্টোবর ছোট লাট স্যার স্টুয়ার্ট বেইলি বিশ্ববিদ্যালয় ও হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার জন্য বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জের কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করেন। ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি ঢাকার শাহবাগে বাগানবাড়িতে বড়লাট হার্ডিঞ্জকে সংবর্ধনা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সকাল ১১টায় নবাব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পৃথকভাবে বড়লাটের কাছে মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়ে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পেশ করে একটি মানপত্র পাঠ করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বঙ্গবিভাগ রদের ক্ষতিপূরণস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং মুসলমানদের জন্য একজন বিশেষ শিক্ষা অফিসার নিয়োগের ঘোষণা। অন্যদিকে মুসলমানদের দাবির প্রেক্ষিতে বড়লাট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিলে কলকাতার কংগ্রেসি নেতা ও হিন্দু বুদ্ধিজীবীরা এর তীব্র বিরোধিতা শুরু করেন। এদিকে নবাব সলিমুল্লাহ ও তার সহযোগীরা সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সেদিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে জনমত গড়ে তোলাসহ সব ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে কলকাতার হিন্দুরা পদক্ষেপ নিলে তাৎক্ষণিকভাবে নওয়াব আলী চৌধুরী কলকাতায় গিয়ে মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আগা খানকে বুঝিয়ে সমর্থন আদায়ে সক্ষম হন। আগা খান নবাব সলিমুল্লাহকে পত্রের মাধ্যমে সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন এবং মুসলিম নেতাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কাজ করার পরামর্শ দেন। ১৯১২ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকা প্রকাশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়, নবাব সলিমুল্লাহ অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী। ১৯১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর অসুস্থ সলিমুল্লাহ বাহাদুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্টিমারযোগে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে কলকাতার ৫৩নং চৌরঙ্গী রোডে অবস্থিত তিনতলায় নিজ বাসভবনে রাখা হয়। কলকাতায় পৌঁছার পর জনৈক ইংরেজ ডাক্তার তাকে দেখতে আসেন। লে. কর্নেল ডা. বেঞ্জামিন হোবস ডেয়ার ছিলেন নবাব সলিমুল্লাহ চিকিৎসক। ১৯১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি দুপুরে তিনি অজ্ঞান হন। সেদিন ডাক্তার হাসান সোহরাওয়ার্দীসহ অনেক ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন। রাত আড়াইটায় নবাব সলিমুল্লাহ বাহাদুর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মৃত্যুকালে তিনি পাঁচ পুত্রসন্তান রেখে যান। তাদের মধ্যে তার জ্যেষ্ঠপুত্র খাজা হাবিবুল্লাহ পরে নবাব হয়েছিলেন। খাজা নাজিমুদ্দিন ছিলেন নবাব সলিমুল্লাহর বোনের ছেলে। নবাব সলিমুল্লাহর মৃতদেহ কলকাতা থেকে ঢাকা আহসান মঞ্জিলে আনা হয়। তাকে সামরিক সম্মান দেওয়া হয়। তার জানাজায় লাখ লাখ জনতা শরিক হয়েছিল। তাকে দাফন-কাফন করা হয় ঢাকার বেগম বাজারে। সেদিন আহসান মঞ্জিলে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ঢাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ছুটে আসেন। তার মৃত্যুতে ঢাকার সর্বত্র মানুষের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। লেখক : কবি ও রম্যলেখক
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১