বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২১ January ২০১৯

মানবতার দেয়াল যখন প্রচারণার মাধ্যম


প্রথমেই জেনে নিই মানবতার দেয়ালের শুরুর কথা। কিশোরগঞ্জ জেলার মকসুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তানজিনা নাজনীনের পরিকল্পনায় গড়ে ওঠে দেশের প্রথম ‘মহানুভবতার দেয়াল’। পরে প্রযুক্তি ও গণমাধ্যমের কল্যাণে দ্রুত তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষক নাজনীনের ‘মহানুভবতার দেয়াল’ পরিকল্পনা ঠিক রেখে শুধু নাম পরিবর্তন করে ‘মানবতার দেয়াল’ লিখে অনেকেই জনসেবামূলক ব্যতিক্রম এই কাজটি শুরু করেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠতে দেখা যায় এই দেয়াল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এটার এতটা প্রচারণা চালিয়েছে যে, মানবতার দেয়াল নেই— এমন স্থান খুব কমই আছে।

প্রথমত, এই মানবতার দেয়ালের কার্যক্রম শুরু হয় মানব সেবার জন্য। আমাদের অনেকেরই কিছু পোশাক থাকে যা বছরখানেক কিংবা কয়েক মাস ব্যবহারের পর আর আমরা ব্যবহার করি না। এসব পরিত্যক্ত কিন্তু ভালো পোশাক অন্য কেউ যার প্রয়োজন সে ব্যবহার করতে পারে তার জন্য এই ‘মানবতার দেয়াল’ গড়ে তোলা। কিন্তু বর্তমানে কিছু কিছু জায়গায় এটাকে এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যে, তা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই না। এমন সব পোশাক ঝুলানো থাকে যা কি না অতি পুরনো, ব্যবহারের অনুপযোগী। যেসব পোশাক পরিধানের কথাও আমরা চিন্তা করতে পারি না, সেই ধরনের পোশাক ঝুলানো থাকে। যা কেউ কোনোদিন নেবে বলে মনে হয় না। এ ধরনের ‘মানবতার দেয়াল’ তৈরি দরিদ্রদের সঙ্গে উপহাস ছাড়া আর কিছুই নয়। এ প্রশ্ন যে কারো মনেই জাগতে পারে। আসলে এসব করে ওইসব ব্যক্তি যারা কি না লোক দেখানো প্রচারে বিশ্বাসী, সেবার ব্রত নিয়ে এ কাজে নামেননি।

তাদের ধারণা, মানবতার দেয়াল তৈরির মাধ্যমে সংবাদপত্রে জায়গা করে নেওয়া একটি সহজতম রাস্তা। লোকের মুখে মুখে প্রচার হবে— অমুক জায়গায় অমুকের নেতৃত্বে তৈরি হলো মানবতার দেয়াল। আর এর আশায় সামান্য কিছু খরচ করে রং মেখে দুটো হ্যাংগার দেয়ালে আলপিন দিয়ে লাগিয়ে সস্তায় ফালানো কিছু কাপড় কিনে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরই তৈরি হয়ে গেল ‘মানবতার দেয়াল’। সত্যিই সেলুকাস, কী অদ্ভুত এই দেশ! এই মানসিকতা ধিক্কারের যোগ্য। মানবতার সেবার নাম ভাঙিয়ে নিজের প্রচারণা চালানোর এই হীনম্মন্যতা আজকের যুগের আবালবৃদ্ধবনিতা— সকলেই বুঝতে সক্ষম।

যে জিনিসটার শুরু এবং উদ্দেশ্য মানুষের সেবা করা সে জিনিসটা আজ ব্যবহার হচ্ছে প্রচারণার মাধ্যম হিসেবে। কিন্তু কিছু কিছু সংস্থা এর জন্য ভালোভাবেই কাজ করে চলেছে এবং তাদের এ ধরনের কার্যক্রম থেকে মানুষ উপকৃতও হচ্ছে। আসলে মানব সেবা একটা যোগ্যতা এবং ভাগ্য যা কি না সবার থাকে না।

 

সফিকুল আহসান ইমন

লেখক : শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১