জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় সারি সারি সরিষার ক্ষেতের পাশে মৌবক্স স্থাপনের মাধ্যমে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন আনোয়ার হোসেন ও তাহের আলী নামে দুই মৌচাষি। উপজেলার ভিকনি ও হরিপুরে স্থাপন করা ৩০০টি মৌবক্স থেকে ২ দশমিক ৫ টন মণ মধু সংগ্রহের আশা করছেন তারা। এ মধু বিক্রি করে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে চাচ্ছেন এই দুই চাষি। চাইছেন দিনবদলের।

মধু মানবদেহের জন্য বেশ উপকারী ও ঔষধি গুণাগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকে সব সময়। তার ওপর  সে মধু যদি হয় নির্ভেজাল তাহলে তো কথাই নেই। এ ছাড়া সরিষার পরাগায়ণের জন্য মৌমাছি বড় ধরনের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। মৌমাছির মধু সংগ্রহের মাধ্যমে ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত পরাগায়ণ বৃদ্ধি পায় এবং সরিষার ফলনও ভালো হয়।

স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় মৌচাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত মৌয়ালীদের সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। কৃষকদের জমির পাশে মৌবক্স স্থাপন ও নিরাপত্তা প্রদানে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

সদর উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের ভিকনী গ্রামের মধু চাষি আনোয়ার হোসেন ও হরিপুর গ্রামের তাহের আলী সরিষা জমির পাশে ৩০০টি মৌবক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। একটি মৌমাছি ৩-৪ কিলোমিটার পর্যন্ত গিয়ে মধু সংগ্রহ করে থাকে। সরিষার ফুল থেকে আগামী ২০ দিনের মধ্যে প্রায় আড়াই টন মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে জানান মৌচাষি আনোয়ার হোসেন ও তাহের আলী।

এ ব্যপারে উপসহকারী কর্মকর্তা আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, মৌ-মাছির বংশবিস্তার মধু সংগ্রহ ও ফ্রেম থেকে মোম পাওয়া যায় তা সবই বিক্রি করা যায়। যার ফলে মৌ-চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। সরিষা ফুলের মধু যেমন খাঁটি তেমনি সুস্বাদু। মানের দিক থেকেও উন্নত হয়। এ মৌসুমে মধুর চাহিদাও বেশি থাকে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মধু উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, সরিষা থেকে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহের জন্য আমরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছি। মৌমাছি শুধু মধু সংগ্রহ নয়, মধু সংগ্রহের পাশাপাশি পরাগায়ণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে সরিষার ফলনও বৃদ্ধি পায়। স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত এই নির্ভেজাল মধু ৩০০-৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে তারা লাভবানও হচ্ছে বলে জানান তিনি।