আপডেট : ১৩ January ২০১৯
কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। নানা ফাঁক-ফোকরের সুযোগ নিয়ে এখন তারা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। সেনা, বিজিবি, র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী তিন স্তরের চেকপোস্ট থাকার পরও কোনোভাবেই ক্যাম্পে আটকে রাখা যাচ্ছে না রোহিঙ্গাদের। এতে স্থানীয় ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ১৬ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫৮ হাজার ৩৬১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে পাঠিয়েছে পুলিশ। আর এসব কাজে সহযোগিতায় করায় ৫৩৬ দালালকে আটক করা হয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। পাশাপাশি ওই এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে (এপিবিএন) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন একটি ইউনিট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৮ নভেম্বর সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাচারের চেষ্টাকালে ৩৩ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড সদস্যরা। এদের মধ্যে ১০ নারী, ১৪ পুরুষ ও ৯ জন শিশু। তারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এ সময় আটক করা হয়েছে ৬ দালালকে। কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে একটি ট্রলারসহ তাদের উদ্ধার করা হয়। গত ১ ডিসেম্বর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে মালয়েশিয়াগামী ১০ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে উদ্ধার করে র্যাব। এ সময় আবদুর রহমান নামে এক দালালকে আটক করা হয়। সব মিলিয়ে গত ১৬ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে পিপলস ফোরাম কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের একটা নির্দিষ্ট স্থানে কাঁটাতারের বেড়ার মধ্যে রেখে কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে। এটা আমাদের জোর দাবি সরকারের প্রতি। সূত্র মতে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত ৩০টি ক্যাম্পে। কিন্তু এসব ক্যাম্পে নেই কোনো কাঁটাতারের বেড়া কিংবা সীমানা প্রাচীর। ফলে অবাধে চলাফেরা করছে রোহিঙ্গারা। স্থানীয়রা বলছেন, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের চেকপোস্ট পেরিয়ে রোহিঙ্গারা নানা উপায়ে ক্যাম্প ছেড়ে বাইরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে অনেকে সফলও হয়েছে। রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ছেড়ে বাইরে আসতে পারায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। স্থানীয় মানুষ বলেন, নানাভাবে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে আসছে। আমাদের জীবনে তাদের একটা প্রভাব পড়ছে। তারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এপিবিন একটি ইউনিট গঠন সম্পর্কে পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে রাখা এবং কক্সবাজারের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এ উদ্যোগ। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করছে। যেকোনো মূল্যে এটা রোধ করতে হবে। এরা নিজেদের ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে আশপাশের পরিবেশ নষ্ট করছে। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের নিরাপত্তায় আরো গতিশীল করতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি বলেন, এপিবিএন ইউনিট গঠনের বিষয়ে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১