আপডেট : ০৪ January ২০১৯
শবরীমালা মন্দিরে দুই নারীর প্রবেশের ঘটনায় ভারতের কেরালা রাজ্যে বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে দক্ষিণাঞ্চলীয় এ রাজ্যটির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি যানবাহনের চলাচলও স্থগিত রাখা হয়েছে। গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া এ সহিংসতায় একজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর পেছনে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ইন্ধন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। খবর বিবিসি ও এনডিটিভি। বিজয়ন বলেন, শবরীমালা মন্দির ইস্যুতে হরতাল-বিক্ষোভে বিজেপি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো উসকানি দিচ্ছে। এসব আন্দোলন করার অর্থ শীর্ষ আদালতকে অবমাননা করা। এ ইস্যুতে গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দেওয়া হয়। কেরালার বিভিন্ন প্রান্তে বনধ সমর্থনকারীদের তাণ্ডবের খবর পাওয়া গেছে। যানবাহন ভাঙচুর, অবরোধ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য। লর্ড আয়াপ্পার মন্দির শবরীমালায় দশকের পর দশক ধরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গত বছর এক আদেশে সুপ্রিম কোর্ট ওই নিষেধাজ্ঞাকে অবৈধ অ্যাখ্যা দেন। তবে মন্দির কর্তৃপক্ষ ও ভক্ত-সমর্থকদের পাশাপাশি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো এর বিরোধিতা করে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় পাওয়ার পর নারীরা মন্দিরটিতে ঢুকতে চাইলেও তাদের বাধা দেওয়া হয়। এমনকি পুলিশ পাহারায়ও সেখানে নারীরা প্রবেশ করতে পারেননি। গত বুধবার ভোরে ৪০ বছর বয়সী বিন্দু আম্মিনি ও ৩৯ বছরের কনকা দুর্গা মন্দিরে প্রবেশ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় তুলকালাম। তাদেরকে মন্দির থেকে বের করে দিয়ে শুরু হয় শুদ্ধিকরণ। মন্দিরে নারীদের ঢোকার খবর পেয়ে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে ভাঙচুর, বিক্ষোভ শুরু করে। সড়ক অবরোধ, জোর করে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। এমনকি সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির যুব মোর্চার সদস্যদের বিরুদ্ধে। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। বিক্ষোভকারীরা গতকাল বৃহস্পতিবার রাজ্যে ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকে। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে এক নারী পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত একশ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শবরীমালা ইস্যুতে এটা বিজেপির পঞ্চম বনধ। আর সঙ্ঘ পরিবার ধরলে গত তিন মাসে রাজ্যে এটা তাদের সপ্তম বনধ। বুধবারের বিক্ষোভে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় বৃহস্পতিবার। এই মৃত্যুর খবরে যেন আগুনে ঘি পড়ার মতো অবস্থা শুরু হয়। তাণ্ডব শুরু করে বনধ সমর্থকরা। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। যানবাহন ছাড়াও তারা সিপিএম সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যজুড়ে কালা দিবস পালন করে ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউডিএফ)। শবরীমালা কর্ম সমিতির নেতা কে পি শশীকলা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অবরোধ-বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতী নারীর প্রবেশে হিন্দু সংগঠনগুলোর আপত্তি থাকলেও রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল সিপিএম শুরু থেকেই কোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের পক্ষে। শবরীমালাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার রাজ্যের লাখ লাখ নারী ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন করে সবক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের দাবি জানান।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১