আপডেট : ২৯ December ২০১৮
মাশরাফি মানেই ভক্তদের উন্মাদনা, বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আর অসীম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভক্তদের সে ভালোবাসা আর উন্মাদনা এবার খেলার মাঠের সীমানা ছাড়িয়ে পড়েছে ভোটের মাঠেও। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। স্থানীয়দের আশা বিপুল ভোটে জয় পাবেন তিনি। তাদের মতে এই জয়ের পেছনে কোনো দল বা প্রতীকের ভূমিকার চেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে ব্যক্তি মাশরাফির ভাবমূর্তি। নড়াইলবাসী তাকে নির্বাচিত করবেন নিজেদের সন্তান, ভাই কিংবা বন্ধু হিসেবে। আর সে বিজয় রেকর্ড ভাঙবে স্বাধীন বাংলাদেশের ছোট্ট জেলা নড়াইলের রাজনীতির ইতিহাসের। আসনটি থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ২০০১ সালে নির্বাচন করেন। সে সময় তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের মুফতি শহিদুল ইসলামের বিপরীতে জয়লাভও করেন। এরপর ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি মুফতি শহিদুল ইসলামকে পরাজিত করেন। সে সময় শেখ হাসিনার বিজয় সহজেই ধরা দেয়নি। জয়ের জন্য তাকে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয় এই আসনে। শেখ হাসিনার আগে নড়াইল-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শরীফ খশরুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস কে আবু বাকের এবং ২০১৪ সালে বিএনপি জোটবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোট থেকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে হাফিজুর রহমান ছাড়া কেউই সহজে জয় পাননি। ভোটের ব্যবধান ছিল নগণ্য। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চিত্র একেবারেই আলাদা। এবারের নির্বাচনে প্রতীকের চেয়ে ব্যক্তি মাশরাফিকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন নড়াইলের আপামর জনতা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতীক নিয়ে ভাবলেও সাধারণ মানুষের ভাবনায় কেবলই ব্যক্তি মাশরাফি। তাদের ভাষ্য, মাশরাফি নড়াইলের মাটির ছেলে। তিনি নড়াইলের গর্ব। নড়াইলকে এখন বিশ্ববাসী চেনে মাশরাফির বাড়ি হিসেবেই। সদর উপজেলার কাগজীপাড়ার আক্তার হোসন বলেছেন, কোনো দল বা প্রতীক দেখে নয়, মাশরাফি নড়াইলসহ বাংলাদেশের গর্ব। তিনি একজন সাদা মনের মানুষ। তার আছে অন্য সবার চেয়ে অনেক বেশি মানবিক গুণ। তিনি নির্বাচিত হলে নড়াইল তথা দেশের উন্নয়ন হবে। তাই দল নয়, নয় কোনো প্রতীক। আমাদের ভোট পড়বে ব্যক্তি মাশরাফির ব্যালটে। সনজিৎ কুমার ভট্টাচার্য্য নামের এক ভোটার বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পর নড়াইলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন প্রার্থী হিসেবে মাশরাফি বিন মুর্তজা নির্বাচন করছেন। তাকে দলমত নির্বিশেষে নড়াইলের মানুষ ভালোবেসে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম দেখলাম কোনো প্রার্থীর এত জনপ্রিয়তা। বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাজমুন নাহার আওয়ামী লীগ সমর্থন না করলেও তিনি ভোটটা মাশরাফিকেই দিতে চান। তিনি দল বা প্রতীক বিবেচনা করে নয়, নড়াইলের সন্তান মাশরাফিকে ভোট দেবেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের রাজনীতিতে মাশরাফির মতো সৎ মানুষদের এগিয়ে আসা উচিত। তিনি ক্রিকেটার, রাজনীতির প্যাঁচ এখনো ভালো বোঝেন না। ফলে তার মাধ্যমে নড়াইলের উন্নয়ন হবে। ভালো মানুষ হিসেবে তাকে সবাই ভোট দেবে। এ ছাড়া তিনি থাকলে সংসদের পরিবেশই পাল্টে যাবে। মিঠাপুর এলাকার মিঠু মোল্লা বলেছেন, যুবক ও নতুন ভোটাররা সবাই ক্রিকেট তারকা মাশরাফি বিন মুর্তজার ভক্ত। শত শত যুবক নিজ খরচে মাশরাফির নির্বাচনী প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণ করেছে, যা ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর ক্ষেত্রে ঘটেনি। জেলা যুবলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান বলেছেন, মাশরাফির জন্য সাধারণ মানুষের ভালোবাস উপচে পড়ছে। কোনো প্রার্থীর জন্য সাধারণ মানুষের এই ভালোবাসা আগে দেখিনি। নড়াইল-২ আসনে মাশরাফির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১