আপডেট : ২৯ December ২০১৮
প্রায় সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কাল রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট দেওয়া যাবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সাড়ে সাত লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকছে। নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানো ও নজরদারির জন্য পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলার বেশকিছু কেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে হেলিকপ্টার। নির্বাচনে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৫ হাজার ৮২৭টি ভোটকেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কাল রোববার প্রথমবারের মতো দেশের কোনো সংসদ নির্বাচনে ভোট দেবেন এক সময় বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিটমহল বাসিন্দারা। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে তারা কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে স্থলসীমান্ত চুক্তি কার্যকর হওয়ায় তারা এখন বাংলাদেশের নাগরিক। দেশের মানচিত্রের মূল ভূখণ্ডে যুক্ত হওয়ার পর একবার স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে এবারই প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যাচ্ছেন এসব অঞ্চলের অধিবাসীরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে উৎসাহ ও উত্তেজনা কাজ করছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা গতকাল শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসবমুখর হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যক প্রার্থী অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলগুলোর আতঙ্কের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, অবশ্যই এটা ভুল প্রমাণিত হবে। আমরা প্রস্তত, ভোটররা সবাই উৎসবমুখর এবং আনন্দঘন পরিবেশে ভোটে অংশগ্রহণ করবে। মোট ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ ভোটারের মধ্যে এবার পুরুষ ৫ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২৯ জন। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৫১ জন। ২৯৯ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র হচ্ছে ৪০ হাজার ১৮৩টি। ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মোট ১ হাজার ৮৪৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী ভোটযুদ্ধে থাকছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে তারা প্রচারের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন। নির্বাচনী দায়িত্বে আছেন রিটার্নিং অফিসার ৬৬, প্রিজাইডিং অফিসার ৪০ হাজার ১৮৩ জন। ১৭ হাজার দেশি পর্যবেক্ষকের পাশাপাশি প্রায় ২০০ বিদেশি পর্যবেক্ষক এবারের ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন। ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ করেছে কমিশন। ভোটকেন্দ্র ও ভোটসামগ্রীর বিশেষ নিরাপত্তা কার্যকর করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে সব ভোটকেন্দ্রের চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রের চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের টহলও জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীজুড়ে সুসংগঠিত ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, নৌবাহিনী, আনসার, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ সব বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় তাদের টহল চলছে। এ ছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিএমপির সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত থাকবে। গতকাল শুক্রবার বিকালে নোয়াখালী-জোরারগঞ্জ সড়কের ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিককের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমার মনে হয় একটা শক্তি মরণ কামড় দিতে চাইতে পারে। কারণ, চূড়ান্ত পরাজয় দেখে মরিয়া হয়ে তারা নির্বাচনে জিততে চাইবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা অভিযোগ পাচ্ছি। তবে যেকোনো ধরনের সহিংসতার চেষ্টা মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত। নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতি শেষ করেছে। আশা করি, যত চক্রান্তই হোক, দেশের জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন। জনগণ যখন ভোট দেওয়ার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ, তখন কোনো শক্তিই এই নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১