দরজায় কড়া নাড়ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আজ মধ্যরাত থেকেই থামছে প্রার্থীদের প্রচারণার উৎসব। নিজের পক্ষে ভোটারদের টানতে অনেক আয়োজনই ছিল তাদের। প্রার্থীর আহ্বানে হোক আর নাগরিক দায়িত্বজ্ঞানেই হোক, ভোট নিয়ে ভোটারদের আগ্রহেরও কমতি নেই। ৩০ ডিসেম্বর নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রার্থীর জয়লাভে ভূমিকা রাখতে চান তারা। সেই কারণেই গতকাল থেকেই তারা নিজ নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকার যেসব ভোটার রাজধানীতে থাকেন তাদের বড় একটা অংশই ঢাকা ছেড়েছেন বুধবারই। এদের মধ্যে বেশিরভাগই গ্রামাঞ্চলের ভোটার। নির্বাচনকে ঘিরে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে তার জেরেই ভোটের দুই দিন আগেই ঢাকার অস্থায়ী বাসিন্দারা নিজ নিজ এলকায় ফিরতে শুরু করেছেন। বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনালে দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। গাবতলীতে ফাহাদ নামের এক যাত্রী জানান, তার বাড়ি ফরিদপুরে। সাপ্তাহিক ছুটি, ভোট উপলক্ষে পাওয়া সাধারণ ছুটি ও নিজের নেওয়া ছুটিসহ পাঁচ দিনের জন্য বাড়ি যাচ্ছেন তিনি।  ভোটের পর আবার ঢাকায় ফিরবেন। তিনি বলেন, নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিতে চাই। আমার এলাকায় একজন যোগ্য প্রতিনিধি আসবেন এই আশায় বাড়িতে ভোট দিতে যাচ্ছি। সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য বসে থাকা হেলাল, তুহিন, আলাউদ্দীন, রুবেল জানান তারা এবারই প্রথম ভোটার হয়েছেন তারা। তাই আগেই বাড়ি যাচ্ছেন। ভোটকেন্দ্রে যাবেন তারা ভোট দেবেন। তবে কেমন প্রার্থীকে ভোট দেবেন সে বিষয়ে আগেভাগে কিছুই বলতে চান না এই শিক্ষার্থীরা।

তাদের মতো এমন অনেকে বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন বাড়ি যেতে। কেউ নির্ধারিত বাস খুঁজতে ব্যস্ত, কেউ বাস কাউন্টারে দাঁড়িয়ে টিকেট নিচ্ছেন।

গাবতলীর গোল্ডেন লাইন কাউন্টারের কর্মকর্তা হাসিবুর জানান, ভোটের কারণে গত কয়েক দিন ধরেই অনেক মানুষ বাড়ি ফিরছেন। এ কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বর্তমানে তাদের টিকেট বিক্রি বেড়ে গেছে। তবে টিকেটের মূল্য আগের মতো রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে যারা বাড়ি যাচ্ছেন তাদের অধিকাংশ মানুষ ভোট দিতে বাড়ি যাচ্ছেন। ভোটের পর আবারো ঢাকায় ফিরে আসবেন। নির্বাচনের পরে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকামুখী টিকেটের চাপ বেশি থাকবে। গতকাল সকালে সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, অন্য স্বাভাবিক দিনের চেয়ে আজ যাত্রীর উপস্থিতি বেশি। চলতি টিকেট কাউন্টারে মানুষের দীর্ঘলাইন। পাশাপাশি অগ্রিম টিকেট দেওয়ার স্থলেও মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি।  রেলস্টেশনের টিকেট কাউন্টারে সাইফুল ইসলাম বলেন, ভোট দেওয়ার জন্য মানুষ ট্রেনযোগে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তবে

আগামীকাল ও পরশু দিনের অগ্রিম টিকেটের জন্য মানুষ বেশি ভিড় করছেন।

ভোটের দিন যানবাহন চলাচলের ওপর নির্দেশনা জারি করে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ২৯ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত সড়কপথে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এর কারণে কাছে পিঠের অনেকেও আগে ভাগেই ফিরতে শুরু করেছেন নিজ এলাকায়।