মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের পয়সা গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে নববধু মিনারা আক্তার রুমা (২০) কে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঘাতক স্বামী ইলিয়াছ খান তার নিজ বাড়ির বসত ঘরের মধ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন নিহত রুমার বড় ভাই মিজানুর রহমান তালুকদার। অভিযোগে জানা যায়, গত এক বছর আগে উপজেলার খিদির পাড়া গ্রামের মৃত সুরুজ তালুকদারের মেয়ে মিনারা আক্তার রুমার সাথে বিয়ে হয় পাশের পয়সা গ্রামের আলাউদ্দিন খানের ছেলে ইলিয়াছ খানের সাথে। বিয়ের সময় কনের ভাই মিজানুর তার সাধ্যমত সব কিছুই দিয়েছে বোনের সুখের জন্য। কিন্তু বিধিবাম। বিয়ের এক বছর না গড়াতেই এ পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিতে হল রুমাকে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে মোবাইল ফোনে শেষ কথা হয় বোন রুমার সাথে তার ভাই মিজানের। রুমা কল করে ভাইকে জানায়, টাকার জন্য ইলিয়াছ তার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করছে। এ অবস্থায় যেভাবেই হোক তাকে টাকা ব্যবস্থা করে দিতে না পারলে সংসারটা আর টিকবে না। এরপরই বিকেল সাড়ে ৪টায় খবর আসে রুমা অসুস্থ্য তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। খবর পেয়ে লৌহজং উপজেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখে বোন রুমার নিথর দেহ পড়ে আছে হাসপাতালে জরুরী বিভাগের সিটে। কর্তব্যরত ডাক্তার জানায়, হাসপাতালে আনার আগেই রুমার মৃত্যু হয়েছে। রুমার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবেই স্বামী ইলিয়াছ খাঁন, শ্বশুর আলাউদ্দিন ও শাশুরী আনোয়ারা বেগমসহ সবাই গা ঢাকা দিয়েছে।

রুমার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় গত এক বছরে রুমাকে তার স্বামী ইলিয়াছসহ সবাই মিলে বহু নির্যাতন করেছেন। এই নিয়ে পারিবারিকভাবে বেশ কয়েকবার শালিস বৈঠকও করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই কাজে আসেনি। রুমার ছোট ভাই বিদেশ থেকে টাকা পাঠালে সেই টাকা রুমাকে দেওয়ার কথা ছিল। তারপরও ঘাতক ইলিয়াছ রুমাকে এতোটুকু ছাড় দেয়নি যৌতুকের জন্য। এই বিষয়ে রুমার ভাই মিজানুর বাদি হয়ে লৌহজং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন জানান, ‘আমরা খবর পেয়ে লাশের ময়না তদন্ত করতে মুন্সীগঞ্জ মর্গে পাঠিয়েছি। রুমার ভাইয়ের দেয়া একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিষয়টি হত্যা না আত্মহত্যা তা বলা যাচ্ছে না। ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে’।