দখলবাণিজ্যে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে মৌলভীবাজারের বেরী লেক। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এ লেকের চারপাশে গড়ে উঠছে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। একসময় এ লেকের পশ্চিম পাশে পার্ক থাকলেও আজ তা হয়ে উঠেছে গাড়ির স্ট্যান্ড। এমনকি মাঝে মধ্যে বসে ছাগলের হাঠ। তবে ইতিহাস বলছে, একসময়ের খরস্রোতা মনু নদী তার গতিপথ পাল্টে শহরের উত্তর পাশ দিয়ে প্রবাহিত হলে সৃষ্টি হয় এ লেকটির।

মৌলভীবাজার জেলার প্রাচীন ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, খরস্রোতা মনু নদী গতিপথ পাল্টে শহরের উত্তর দিকে প্রবাহিত হওয়ায় এ লেকের সৃষ্টি হয়। নামকরণ করা হয় বেরী লেক। একসময় পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হতো লেকের পশ্চিম পাশে, আর দক্ষিণ পাশে ছিল শিশু পার্ক। কিন্তু বর্তমানে মূল অংশ ছাড়া তার কোনো অস্তিত্বই নেই।

একসময় এই বেরীর লেকে সাঁতার কেটেছেন অনেকে, বিকেলে লেকের পাড়ে চলতো খেলাধুলা। আর এখন লেকে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা, লেকের পাড়ে গড়ে উঠেছে ট্রাক স্ট্যান্ড, রাতে বসে গাঁজার আসর। দখলদাররা দিনে দিনে গ্রাস করে ফেলেছে লেকের প্রায় অর্ধেক অংশ। লেকের চারপাশে নামে-বেনামে গড়ে উঠেছে পাকা দালানকোঠাসহ বিভিন্ন আবাসিক-অনাবাসিক স্থাপনা। কিন্তু কখনোই এসব প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি প্রশাসনের কাউকে। আর জেলা প্রশাসনের খতিয়ানভুক্ত থাকায় এ ব্যাপারে কিছু করতে পারছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।

মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মাঝেমধ্যে অভিযান চালালেও এ জায়গাটি জেলা প্রশাসনের খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না তারা। তবে জেলা প্রশাসন জায়গাটি পৌর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান পৌর মেয়র ফজলুর রহমান।

লেকটি দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করে একটি আধুনিক দৃষ্টিনন্দন পার্ক স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করছেন এ জেলার স্থানীয়রা। তবে এ ব্যাপারে কেবল প্রশাসনই উদ্যোগ নিতে পারে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এ লেকটি হয়ে উঠতে পারে শহরের একটি দৃষ্টিনন্দন বিনোদনের স্থান।

এই লেকটিকে ঘিরে হাতির ঝিলের মতো একটি দৃষ্টিনন্দন পার্ক করা যেতে পারে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।