বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৪ December ২০১৮

সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব রসুল (সা.)


পৃথিবী যখন ঘন অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছিল, জাহেলিয়াতের ভয়াল অন্ধকার যখন ক্রমেই গ্রাস করে নিচ্ছিল সমগ্র পৃথিবী, যখন গোত্রে গোত্রে ছিল দলাদলি, হানাহানি, রক্তারক্তির প্রবল স্রোতধারা, মানুষে মানুষে ছিল রক্ত-বর্ণ-ভাষা ও আভিজাত্যের দুর্লঙ্ঘ প্রাচীর ঠিক তেমনি বিভীষিকাময় মুহূর্তে মহান আল্লাহ সিরাজুম মুনীরার চিররশ্মি দিয়ে রাহমাতুল্লিল আলামিন হিসেবে ধরণির বুকে প্রেরণ করেন আখেরি নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে।

সিরাজুম মুনীরার সে উজ্জ্বল রশ্মির আলোকে তিনি পথহারা মানবজাতিকে পৌঁছে দেন হেদায়াতের চির উজ্জ্বল সরণিতে। রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে তিনি মানবতার সামগ্রিক জীবনের জন্য এমন আদর্শ বাণী ও শিক্ষা নিয়ে আসেন, যা ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম মানুষকে পরিণত করে ইতিহাসের সর্বোত্তম স্বর্ণমানবে, যা মানবতাকে সন্ধান দিল ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনের সামগ্রিক সফলতার এক সোনালি যুগের। স্মরণীয় করে রাখল মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনধারাকে। ধীরে ধীরে মানুষের জীবন হয়ে উঠল সুস্থ, সুন্দর, প্রশান্ত, গতিময় ও কল্যাণকর। মানুষে মানুষে গড়ে উঠল সাম্য, মৈত্রী, মানবতা, একাত্মতা ও ভ্রাতৃত্বের মহান বন্ধন। মানবসমাজে সঞ্চারিত হলো, শান্তি, সততা ও মমতার শীতল বায়ু। তাঁর চারিত্রিক মাধুর্য, ভদ্রতা, শালীনতা, মানবসেবা, পরোপকার সব মানুষের কাছে ছিল পরিচিত। তাঁর লজ্জাশীলতা কুমারী তরুণীকেও হার মানাতো। আমানতদারি ও বিশ্বস্ততা চরম শত্রুর মনেও বন্ধুত্বের আবেগ সৃষ্টি করত।

তাঁর স্পষ্টবাদী বিজ্ঞ ফয়সালা নিষ্ঠুর জালিমের মনেও সৃষ্টি করত অব্যাহত স্পন্দন। তাঁর নির্ভরযোগ্য অভিভাবকত্ব ছিল এতিম বিধবাদের ভরসাপূর্ণ আশ্রয়। আত্মীয়দের সুখ-দুঃখের চিরসাথী ছিলেন তিনি। কেউ কোনোদিন বলতেও পারেননি, তিনি কখনো কোনো অসঙ্গত কথা বলেছেন, কারো সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন, জীবনের কোনো মুহূর্তে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। মূলত রসুল (সা.) ছিলেন সর্বজনীন সর্বগুণের আধার। যার সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, (হে নবী!) নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।

কী অতুলনীয় মর্যাদা তাঁর! অতি অল্প সময়েই সত্যবাদিতার জন্য ‘সাদিক’, ন্যায়নিষ্ঠার জন্য ‘আল-আমীন’ উপাধিতে ভূষিত হন। নবীজি (সা.) চরিত্রের যে উচ্চ শিখরে অধিষ্ঠিত ছিলেন, সে চরিত্রে কালিমা লেপন করা সম্ভব নয়। মানুষ এ চরিত্র থেকে আদর্শ গ্রহণ করবে। তাই তাঁর পৃথিবীতে আগমন থেকে গমন পর্যন্ত পুরো জীবন নিষ্কলুষ পবিত্রতার বাস্তব উদাহরণ। জাতি-বিজাতি, ধর্ম-বিধর্ম নির্বিশেষে সব বুদ্ধিজীবী ও দার্শনিক এ কথা অকপটে স্বীকার করেছেন, নবী করীম (সা.)-ই সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব এবং তিনিই ইতিহাসের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ধর্মীয় ও জাগতিক উভয় ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ সাফল্যে সফল।

উবায়দুল হক খান

লেখক : মুহাদ্দিস ও প্রাবন্ধিক


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১