আপডেট : ১০ December ২০১৮
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের একেবারেই শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শেষ সেমিস্টারের ছাত্র। শিক্ষাজীবনের শুরু অর্থাৎ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ হয়েছে। তাদের প্রত্যেকেই ছিলেন নিজ নিজ জায়গা থেকে সেরা। শিক্ষাজীবনের প্রত্যেক শিক্ষকের প্রতি সমানভাবে শ্রদ্ধাশীল আমি। তাই তাদের সবার মধ্য থেকে প্রিয় শিক্ষক হিসেবে বাছাই করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। কিন্তু সেই কঠিন কাজকে সহজ করার পেছনে যার অবদান, তিনি আর কেউ নন- আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. সৈয়দ আখতার হোসেন স্যার। আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি আমার শিক্ষাজীবনের সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক। আমার ছাত্রজীবনের এক বিশাল সৌভাগ্য ছাত্র হিসেবে সরাসরি স্যারের সান্নিধ্য পাওয়া। যেসব শিক্ষার্থী স্যারের সান্নিধ্য একবার পেয়েছে, আমার বিশ্বাস তারাও স্যারকে তাদের প্রিয় শিক্ষকের আসনে বসাতে বাধ্য। একজন বিভাগীয় প্রধানের কথা ভাবলেই সবার চোখের সামনে স্বাভাবিকভাবেই যে চিত্রটা ফুটে উঠবে, তাহলো খুবই গুরুগম্ভীর, প্রচুর ব্যস্ততার মোড়কে মোড়ানো একজন ব্যক্তিত্ব। একজন বিভাগীয় প্রধানের ব্যস্ত থাকাটাই স্বাভাবিক। জ্ঞানগরিমার অধিকারী হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু বাস্তবে স্যার একদম ভিন্ন। একটা প্রবাদ আছে- যে গাছে বেশি ফল ধরে, সেই গাছ ফলের ভারে নুইয়ে যায়। স্যার হলেন সেরকম প্রকৃতির মানুষ। এত ব্যস্ততার মধ্যে থেকে, এত জ্ঞানের অধিকারী হয়েও স্যারের মধ্যে তার বিন্দুমাত্র অহমিকা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী কখনো বলতে পারবে না স্যারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে দেখা করতে পারেনি অথবা তার কথা শোনেননি স্যার। শিক্ষক হিসেবে ছাত্রকে পাঠদান করা সব শিক্ষকের কাছে খুবই সাধারণ। কিন্তু কোনো ছাত্রকে আবিষ্কার করা, তার মন-মানসিকতা পাঠ করা এই কাজটা সবাই পারে না। যেটাতে স্যার সবচেয়ে পারদর্শী। কোনো শিক্ষার্থী স্যারের কাছে তার কোনো শিক্ষাসংক্রান্ত সমস্যা কিংবা ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে গেলে স্যার তার শত ব্যস্ততাকে দূরে সরিয়ে শিক্ষার্থীর সব কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। তার দেওয়া পরামর্শ হতাশাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের জীবনের গতিপথ পাল্টে দেয়। স্যারের একটা বড় গুণ হলো, সবসময় চেষ্টা করেন তার নিজের সময়নিষ্ঠা এবং অধ্যবসায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ভেতর প্রতিফলিত হোক। অন্য ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরাও স্যারের কাছ থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে জানতে আসে। তার ছাত্র নয় বলে কখনো মনে করেন না। স্যারের কোনো শিক্ষার্থী আজ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়নি। প্রত্যেকেই চাকরিজীবী এবং সামাজিক জীবনে অনেক ভালো জায়গায় অবস্থান করছে। স্যারের যে দিকটি সব থেকে ভালো লাগে, তাহলো স্যার একজন টেকনোলজিপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। টেকনোলজির এমন কোনো শাখা নেই, যেখানে স্যারের বিচরণ নেই। নতুন টেকনোলজি সম্পর্কে পত্রপত্রিকা কিংবা অনলাইন নয়, সর্বপ্রথম জানতে পারি স্যারের কাছ থেকে। সময়ের সঙ্গে, বিজ্ঞানের সঙ্গে ছুটে চলা মানুষ। ছাত্র হিসেবে বলছি না, স্যারের অসাধারণ একটা দিক হলো- মনোমুগ্ধকর ও প্রাঞ্জল উপস্থাপনা, যা স্যারকে সারা দেশে অসাধারণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। স্যার যখন কোনো স্টেজে কথা বলেন, সেখানে উপস্থিত প্রত্যেক মানুষ স্যারের কথা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শোনেন। হলফ করে বলতে পারি তার শুদ্ধ এবং প্রমিত বাংলা উচ্চারণে মুগ্ধ হয় সবাই। অসম্ভব সুন্দর করে মাউথ অরগ্যান (হারমোনিকা) বাজাতে পারদর্শী। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অনুষ্ঠানে তিনি বক্তৃতা শেষে মাউথ অরগ্যানের সুরে সবাইকে মোহিত করেন। পিতা-মাতার পরই শিক্ষকের স্থান- কথাটা সেই ছোট্টবেলা থেকে শুনে এলেও অনুভব করেছি স্যারের দিকনির্দেশনা থেকে। স্যার আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়ে আমার জীবনের সফলতার পথ দেখতে অনেক সহজ করে দিয়েছেন। তাকে দেখে আমার এই ক্ষুদ্র জীবনের চলার পথে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ ও প্রেরণা পেয়েছি। স্যারকে কখনো সামনাসামনি বলা হয়ে ওঠেনি স্যার আমার শিক্ষাজীবনের সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক এবং সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। আমার জীবনের আদর্শ। লেখাটা স্যারের চোখে পড়তে পারে, তাই বলতে পারি- ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর মাঝে দাঁড়িয়ে নির্দ্বিধায় বলব সৈয়দ আখতার হোসেন স্যারের সান্নিধ্য পেয়েছি আমি। তার ছাত্র হতে পেরে আমি গর্বিত এবং সৌভাগ্যবান।’ বহু বছর তিনি বেঁচে থাকুন আমাদের ভালোবাসায় ও শ্রদ্ধায়। সৌরভ দাস লেখক : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১